পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২০
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

চন্দ সুজ্জ আদি দেবে, পদাতিক হয়্যা সেবে,
সভে মিলি বাজান বাজনা॥
আপনি চণ্ডিকা দেবী, তিহ হৈল্যা হায়া বিবি,
পদ্মাবতী হইল বিবিনূর।
যত্তেক দেবতাগণ, হয়্যা সবে একমন,
প্রবেশ করিল জাজপুর॥

 ইহা হইতেই বুঝিতে পারা যায় যে ৬।৭ শত বৎসর পূর্ব্বেও ব্রাহ্মণবিদ্বেষ কিরূপ প্রবল ছিল।

 মধ্যে মধ্যে বিশেষতঃ গত তিন শতাব্দীতে, গুরু নানক, কবীর, চৈতন্য প্রভৃতি মহাত্মা এদেশে জন্মগ্রহণ করিয়া সকলেই “ভাই ভাই” এই সাম্যবাদ প্রচার করিয়া গিয়াছেন। যদি তাঁহারা এই শিক্ষা প্রচার না করিতেন, তাহা হইলে উত্তর ভারতে আরও অনেক লোকে নিশ্চয় মুসলমান ধর্ম্ম গ্রহণ করিত।

 আর্য্যগণ যেমন অনার্য্যদিগকে ঘৃণা করিতেন, প্রাচীনকালের ইহুদীরাও অন্যান্য জাতিকে সেইরূপ ঘৃণা করিত। তাহারা ভাবিত তাহারা ঈশ্বরের বিশেষ অনুগৃহীত ও অন্যান্য জাতিরা নীচ তাহাদের সঙ্গে আহার করিলে অশুচি হইতে হয়। যীশুখৃষ্ট প্রথমে ইহুদীদের শিক্ষা দিলেন মানুষ মাত্রেই ঈশ্বরের পুত্র—সকলেই ভাই ভাই। পরে সেণ্টপলও এই মহতী বাণীর ব্যাখ্যা করিয়া প্রচার করিলেন—“ঈশ্বর কেবল ইহুদীদেরই ঈশ্বর নহেন তিনি অন্যান্য জাতিরও ঈশ্বর।” কাজেই কাহাকেও নীচ বলিয়া অবজ্ঞা করা মূঢ়তার পরিচায়ক। মোক্ষ লাভের পথ সকলেরই পক্ষে মুক্ত। কিন্তু গর্ব্বান্ধ ইহুদী এই সনাতন সত্যের মর্ম্ম উপলব্ধি করিতে পারিল না। ইহার ফল কি হইল? ইহুদী জাতি এখন স্বদেশ হইতে বিতাড়িত হইয়া পৃথিবীময়