পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

মধ্যে অজ্ঞতা খুব বেশী; আমরা সাত্ত্বিকতার বড়াই যতই করি না, সাত্ত্বিকতার প্রকৃত অর্থ অনেকেই বুঝি না; সাত্ত্বিক প্রকৃতির লোক আমাদের মধ্যে কম। যিনি শ্রেয়কে বরণ করেন, এবং যিনি নিজের ও লোকের শ্রেয়ের জন্য সর্ব্বপ্রকার ক্ষতি ও দুঃখ সহ্য করিয়া সৎকর্ম্ম করেন, তিনি সাত্ত্বিক প্রকৃতির লোক। দেশের অধিকাংশ লোক দারিদ্র্যবশতঃ ভাল করিয়া খাইতে পায় না; তজ্জন্য তাহারা দুর্ব্বল। তাহার উপর নানা রোগে তাহাদিগকে আরো দুর্ব্বল করিয়া রাখে। বৈদেশিক প্রতিযোগিতায় এবং শিক্ষার অভাবে শিল্পনৈপুণ্য দেশে না থাকারই মধ্যে। তাহাতে আমাদিগকে আরো দরিদ্র, দুর্ব্বল ও ভীরু করিতেছে।

 আমাদের হীনতার কারণ একটি নয়, অনেক। তাহারই দুই-একটির উল্লেখ করিতেছি।

 দেশের প্রত্যেক পুরুষ ও প্রত্যেক নারীর সমান-মনুষ্যত্ব অস্বীকার আমাদের হীনতার একটি প্রধান কারণ। জন্মতঃ কেহই বড় নয়, কেহ ছোটও নয়। সেই সামাজিক ব্যবস্থাই সুব্যবস্থা, যাহা জন্মনির্বিশেষে প্রত্যেক নারী ও পুরুষকে তাহার শক্তি ও চেষ্টা অনুসারে যে কোন দিকে ভাল ও বড় হইবার, সমাজসেবক হইবার, সমান সুযোগ দেয়। এ পর্য্যন্ত কোন দেশের সমাজব্যবস্থাই এরূপ নিখুঁত হয় নাই; কিন্তু পাশ্চাত্য কোন কোন দেশের সমাজনীতি এই আদর্শের দিকে অনেকটা অগ্রসর হইয়াছে। আমাদের দেশের সমাজব্যবস্থায় এই সাম্যনীতি যে ভাবে অস্বীকৃত হইয়া আসিতেছে, এখন তাহা আর কোন দেশে সেভাবে কার্য্যতঃ অস্বীকৃত হইতেছে না। এজন্য আমরা হীন হইয়া আছি, অন্য কোন জাতি শক্তিশালী ও অগ্রসর হইতেছে। অনেকে সামাজিক সাম্যের মানে না বুঝিয়া বা উহার কদর্থ করিয়া সাম্যনীতিকে