প্রচলিত ছিল না। আর্য্যেরা ছিল শ্রেয়,— অনার্য্যেরা নিকৃষ্ট বলে বিবেচিত হ’ত। প্রাচীনকালে অন্য অনেক দেশেই এইরূপ ব্যবস্থা ছিল। পুরাতন বাইবেল অনুসারে ইহুদীরা ছিল ভগবানের সর্ব্বাপেক্ষা প্রিয় জাতি; আর জেন্টাইলারা ছিল নিকৃষ্ট, অধম, অস্পৃশ্য—শিয়াল কুকুরের সামিল। মিশর দেশের পুরাতন জাতির মধ্যেও এরূপ ভেদ ছিল। ১৮৭০ খৃষ্টাব্দের আগে জাপান দেশের সামুরাই বা ক্ষত্রিয়গণ অন্যান্য জাতিকে হীন ব’লে ঘৃণা কর্ত—শিল্পী বা ব্যবসায়ীর সংস্পর্শে আসা লজ্জাকর ব’লে বিবেচনা করত। জাপানের চিন্তাশীল নেতৃবর্গ ইচ্ছা ক’রে চেষ্টা ক’রে ব’লে বুঝিয়ে, ব্যষ্টির বিকাশের প্রধান অন্তরায় এই জাতিভেদ প্রথাকে সমাজ থেকে রহিত ক’রে দিয়েছেন। কিন্তু যে দেশের যেরূপ আকারেই থাক না কেন, আমাদের দেশের মত এমন সর্ব্বনাশকারী জাতিভেদ পৃথিবীর কোথাও নেই, কখনও ছিল কি না সন্দেহ! আমাদের দেশে জাতিভেদের পাষাণ-স্তূপে নির্ম্মাতা এমন উগ্র হ’য়ে প্রকট হয়েছে যে তার নিঃশ্বাসে উৎকট ঘৃণার গরল অহরহ বাহির হচ্ছে, তার চাপে পতিত জনসঙ্ঘ দলিত ও মথিত হ’য়ে নিতান্ত অসহায়ের মত একপাশে প’ড়ে রয়েছে।
সর্ব্বপ্রকার বিভেদ ভুলে গিয়ে আপামর সাধারণের কল্যাণকামনায় বুদ্ধ যখন নূতন সত্যের প্রচার আরম্ভ কর্লেন—সেই প্লাবনের যুগে ব্রাহ্মণাধিকার তিরোহিত হ’য়ে ভারতবর্ষে সব একাকার হ’য়ে গেল। সেই ভাববন্যা হতে যে যুগের উদ্ভব হ’ল ভারতবর্ষের সে এক শ্রেষ্ঠ যুগ। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন বিষ্ঠা ও বিজ্ঞান সর্ব্বসাধারণের জন্যে উন্মুক্ত হ’ল; মগধ সাম্রাজ্য ভারতবর্ষে সুপ্রতিষ্ঠিত হ’য়ে মহারাজ অশোকের সময় দেশবাসীকে এক নূতন জীবনের আস্বাদ প্রদান কর্লে। সে জীবনে জাতিভেদ একপ্রকার বিলুপ্ত হ’য়ে গেল; বিবাহাদির