যে মাত্র পাঁচজনের বংশ বরাবর সোজাসুজি চ’লে এসে নব্যবাংলায় এই ১৩ লক্ষ ব্রাহ্মণের উৎপত্তি হ’ল! নানা জাতির মেলামেশা অনেকদিন ধরেই হয়েছে—এই আমাদের প্রতিপাদ্য,—তাই এসব ঘটনার উল্লেখ কর্ছি। রিস্লি প্রভৃতি নৃতত্ত্ববিদের মতে অনেক নূতন নূতন অনার্য্যজাতি হিন্দুসমাজের পার্শ্বে বসবাস কর্তে কর্তে ক্রমে হিন্দু হ’য়ে গেছে। পাঁচ ছয় শত বৎসর পূর্ব্বে আসামে অহোম নামে এক রাজবংশ ছিল। তাঁরা প্রথমে ছিলেন মঙ্গোলীয়; তাঁদের আদিবাসভূমি ছিল শ্যামদেশ। কিন্তু ক্রমে ক্রমে হিন্দুর আচার ব্যবহার গ্রহণ ক’রে তাঁরা অবশেষে হিন্দু এবং ক্ষত্রিয় ব’লে পরিচিত হলেন। সুতরাং দেখুন আমরা যে জাতি জাতি বলে চীৎকার ক’রে থাকি এবং কারও স্পর্শে কারও বা জলগ্রহণে জাত গেল ভেবে প্রমাদ গণি, তার মূলে প্রকৃত সত্যপদার্থ কিছু আছে অথবা তার ভিত্তি একটা প্রকাণ্ড কুসংস্কারের উপর—যা কোন কালেই যুক্তি বা বিচারসহ নহে?
তারপর আমাদের এই বাংলাদেশের কৌলিন্য প্রথার কথা ধরা যাক। বল্লালসেনের সময় এই প্রথার প্রচার হয়। নবধা কুললক্ষণম্—কুলীন হ’তে হ’লে আচার বিনয় বিদ্যা প্রভৃতি নয়টি সৎগুণের অধিকারী হ’তে হয়। গুণের উপর কৌলিন্যের প্রতিষ্ঠা হ’লেও এই মর্য্যাদার অধিকারী হলেন একমাত্র ব্রাহ্মণেরা; যেন গুণরাশি ব্রাহ্মণেরই একচেটে, আর ব্রাহ্মণেতর সকল জাতিই একবারে নির্গুণ। কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, গুণ কি বাস্তবিকই বংশপরম্পরাগত হয় অথবা বিদ্যাশিক্ষা ও পারিপার্শ্বিক ঘটনাবলির উপর গুণের বিকাশ যথেষ্ট পরিমাণে নির্ভর করে? কথাটা এতই সোজা যে স্কুলের ছোট ছেলেও অনায়াসে বুঝ্তে পারে। প্রতিভাশালী ব্যক্তির পুত্র হ’লেই কি প্রতিভার