অনুশীলন এবং সামাজিক রাজনৈতিক প্রভৃতি নানাবিষয়ের আলোচনা এদের মধ্যেই অনেক পরিমাণে সীমাবদ্ধ। অন্যান্য সকল জাতি প্রায় এসব বিষয়ে এঁদের বহু পশ্চাতে প’ড়ে আছেন। এক্ষণে আপন শিক্ষা দীক্ষা, অনুষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান ও জ্ঞানান্বেষণের ধারাকে দিন দিন পুষ্ট ও প্রবল ক’রে তুলে যদি সমগ্র জাতিকে বেঁচে থাকতে হয় তবে প্রকৃত কর্ম্মীর আবির্ভাব ২৩ লক্ষ উঁচু জাতের মধ্য হ’তে অধিক সংখ্যক হবে অথবা যাদের আমরা নীচজ়াত আখ্যা দিয়ে দূরে ঠেলে রেখে দিয়েছি সেই চার কোটিরও অধিক জনসংঙ্ঘ অধিক সংখ্যক কাজের লোক উৎপন্ন ক’রে সমাজকে পুষ্ট কর্বে? সকল দেশে সমাজের সর্ব্বপ্রকার স্তর হতে প্রতিভার বিকাশ হয়েছে। সুতরাং এই দুর্দ্দিনে আজ একবার আমাদের ভেবে দেখা উচিত যে এই বিরাট জনসঙ্ঘকে নিকৃষ্ট ব’লে অবজ্ঞা ক’রে আমরা কত উৎকৃষ্ট জিনিষের অপচয় কর্ছি, সামাজিক অত্যাচারে ও শিক্ষাদীক্ষার অভাবে আমাদের কতটা শক্তি বিকাশলাভ না ক’রে লোকচক্ষুর আড়ালে মুস্ড়ে পড়ছে। এই প্রসঙ্গে আর একটা কথা মনে হচ্ছে। বাঙালীর আজ সামরিক বিভাগে প্রবেশের পথ কতকটা উন্মুক্ত হয়েছে; ক্রমে আরও উন্মুক্ত হবে। বাঙ্গালী সেনা নিয়ে যে সৈন্যদল গঠিত হবে তাতে কি শুধু উচ্চজাতিরই লোক থাকবে অথবা সমাজের সকল স্তর থেকে সুস্থ ও সবলদেহ লোক সংগ্রহ ক’রে সেই সৈন্যদলকে পরিপুষ্ট কর্তে হবে? বাংলায় মুসলমানের সংখ্যা অর্দ্ধেক; তাদের মধ্যে জাতিভেদ নেই, সুতরাং তাদের কথা এখন বাদ দিলাম। কিন্তু বিভিন্নজাতির হিন্দুসেনা যখন কোন, অভিযানে বাহির হবে তখন বামুন রাঁধুনীর অভাব হ’লে কি তারা যে-যার হাঁড়ি মাথায় ক’রে কুচকাওয়াজ কর্বে? আজকাল ট্রেঞ্চ অর্থাৎ খাদের মধ্যে আত্মগোপন ক’রে যুদ্ধ করতে হয়; সেখান থেকে উঠে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক চেয়ে
পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৭৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৪
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী