যখন স্বাধীন চিন্তার গলা টিপে মারা হ’ল, তখন ৬৪ কলাবিদ্যা লোককে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ প্রদর্শন ক’রে অন্তর্হিত হ’য়ে গেল। বিজ্ঞানের যা কিছু রইল—তা Surgeon পরামাণিক, Botanist বেদে আর Metallurgist ভীল কোল সাঁওতালের হাতে। আঙুলের নৈপুণ্যে ঢাকাই মস্লিন অতি সুক্ষ্ম হ’ল বটে, কিন্তু মস্তিষ্কের দৌড় ওই “পাত্রাধার তৈল” বা “তৈলাধার পাত্রের” বেশী আর গেল না। বুদ্ধি জড় ও আড়ষ্ট হ’য়ে উঠ্ল। তাই পর্য্যবেক্ষণ বা পরীক্ষণের দ্বারা বস্তুর অস্তিত্ব বিচার ক’রে ঘটনাপরম্পরার কার্য্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয়ের চেষ্টা লুপ্ত হ’ল। সামাজিক অত্যাচারের ফলে সাধারণ লোক অস্পৃশ্য ও মূর্খ হ’য়ে পশুত্বে নেমে গেল। ওদিকে আর্করাইট (Arkwright) নাপিত ছিলেন, ক্ষৌরকর্ম্মের দ্বারা জীবিকা অর্জ্জন করিতেন—কিন্তু স্বীয় অসাধারণ প্রতিভাবলে আবিষ্কার ক’রে বস্ত্রবয়ন-কলে যুগান্তর উপস্থিত করেন। আমি আবার জিজ্ঞাসা করি আমাদের দেশে কোন্ নাপিত এ প্রকার কৃতিত্ব দেখাতে সক্ষম? তাই এদের মধ্য থেকে জেমস্ওয়াট বা আর্করাইটের উদ্ভব অসম্ভব হ’য়ে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশে স্বাধীন চিন্তা ও কর্ম্মশক্তি লুপ্ত হ’য়ে গিয়ে বিদ্যা ও বিজ্ঞানচর্চ্চার যে শোচনীয় অবস্থা হয়েছে তার জন্য জাতিভেদ বড় কম দায়ী নয়।
প্রেসিডেণ্ট উইল্সন তাঁর New Freedom নামক পুস্তকের এক স্থানে আমেরিকার বিশেষত্ব সম্বন্ধে বল্ছেন যে সে দেশের রাস্তার মুটে পর্য্যন্ত রাষ্ট্রনায়ক হবার আশা পোষণ কর্তে পারে; কে দেশের নেতা হবে এবং কোন্ কুলে তার জন্ম হবে যুক্তরাজ্যে একথা কেউ নিশ্চিত ক’রে বলতে পারে না। সুবিধা ও সুযোগ জনসাধারণের সকলের কাছে সমানভাবে উন্মুক্ত; সুতরাং সমাজের যে কোন স্তর থেকে সেখানে দেশনায়কের উদ্ভব হ’তে পারে। প্রেসিডেণ্ট উইলসন আরও বলেন