১৴৹
করেন। প্রফুল্লচন্দ্র কলিকাতায় ফিরিয়া তাঁহার এই অকৃত্রিম সুহৃদের গৃহে প্রায় এক বৎসর কাল অতিবাহিত করিয়াছিলেন। এখানে বসুপত্নীর নিকট অনুজোচিত স্নেহ লাভ করিয়া তাঁহার ক্লান্ত দেহ সুস্থ ও ক্ষুব্ধ চিত্ত শান্ত হইল।
১৮৮৯ খৃষ্টাব্দের গ্রীষ্মাবকাশের পর কলেজ খুলিলেই প্রফুল্লচন্দ্র প্রেসিডেন্সি কলেজের বিজ্ঞানাগারে প্রবেশ করিয়া সেই যে টেষ্ট টিউবকে (test tube) সাদরে বরণ করিয়া লইলেন, তাঁহার জীবনের অর্দ্ধ শতাব্দী অতীত হইয়া গিয়াছে, তবুও তিনি তাহার সহিত সম্বন্ধ অক্ষুণ্ণ রাখিয়াছেন। তিনি সেদিনও বলিয়াছেন—‘বিজ্ঞানাগারই আমার শান্তি ও কর্ম্মের স্থল; সেখানে টেষ্ট টিউব-এর সহিত আলাপে আমি আমার বার্দ্ধক্য ভুলিয়া যাই,—৩৩ বৎসর, এক শতাব্দীর এক তৃতীয়াংশ কাল বিজ্ঞানাগারের সীমানার মধ্যে আবদ্ধ থাকিয়া বাহ্য জগতের সহিত সকল সম্বন্ধচ্যুত হইয়া পড়িয়াছি।’
প্রফুল্লচন্দ্রের আজীবন সাধনার ফল, তাঁহার বিশ্ববিখ্যাত আবিষ্ক্রিয়া, বেঙ্গল কেমিক্যাল ও ফারমাসিউটিক্যাল ওয়ার্কসের প্রতিষ্ঠা ও হিন্দু রসায়নশাস্ত্রের ইতিহাস-সঙ্কলন প্রেসিডেন্সি কলেজের বিজ্ঞানাগারেই সম্ভাবিত হইয়াছিল।
প্রফুল্লচন্দ্র যখন প্রেসিডেন্সি কলেজে প্রবেশ করেন তখন এদেশে বিজ্ঞানশিক্ষার অবস্থা অতি শোচনীয় ছিল। পরীক্ষা পাশের উদ্দেশ্য ভিন্ন অন্য কোন অভিপ্রায়ে কেহ বিজ্ঞানচর্চ্চা করিতে ইচ্ছা করিত না। পরীক্ষাপাশের সুবিধা হইবে মনে করিয়া যাহারা পদার্থবিজ্ঞান বা রসায়নশাস্ত্র পাঠ করিত, পরীক্ষা পাশের সঙ্গে সঙ্গে তাহারা উহা বিস্মৃত হইতে আরম্ভ করিত। এই সময়ে যাহারা এম, এ পরীক্ষায় প্রথম