আবার নরমই হোক্ আর গরমই হোক্ যা-কিছু আমার দেশকে যথার্থ উন্নতির পথে অগ্রসর ক’রে দেয় তাই আমি পরম পবিত্র বস্তু ব’লে জ্ঞান করি।
১৯০৬ সালের স্বদেশী আন্দোলনের প্রবল বন্যায় যাঁরা ভেসেছিলেন, তাঁদের অনেকেই আবার ভাঁটার মুখে উণ্টাপথে ভেসে যাচ্ছেন। যাঁরা স্রোতের মুখে তৃণের মত, নূতনের প্রতিষ্ঠা কর্বার জন্য যাঁদের উৎকট পুরুষকার নেই, তাঁদের উদ্দীপনার অগ্নিশিখা শেষে গোলদীঘির ধারে বক্তৃতা ও হাঁকডাকের ধূমরাজিতে পরিণত হ’ল। ব্যবসানীতি ও অর্থশাস্ত্রের ক-খ-জ্ঞান নেই, তাই শুধু বক্তৃতার দ্বারা শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও অর্থসংস্থানের ব্যর্থ চেষ্টা আমাদের ভিতরে বাহিরে খুব একটা প্রবল ধাক্কা দিয়ে গেল। স্বদেশী আন্দোলনে বাঙলার শিল্প জাগ্ল না—কিন্তু জাগ্ল—বোম্বাই শিল্প। বোম্বাই প্রদেশে কাপড়ের কলকার্খানা স্বদেশীর হাওয়ায় বেশ শ্রীসম্পন্ন হ’য়ে উঠ্ল।
বাঙলায় স্বদেশীশিল্পের যে পুনরুখান হয় না তার প্রধান কারণ বাঙালী উদ্যমহীন, অলস ও আরামপ্রিয়। আবেগপূর্ণ ভাবপ্রবণতা দ্বারা আমরা হনুমানের মত এক লাফে সাগর পার হতে চাই। কিন্তু ভাবোচ্ছ্বাসের পশ্চাতে বিপুল কর্ম্মচেষ্টা না থাকায় আমাদের কেবল ভরাডুবি হতে হয়। আবার ভিতরের এই সাংঘাতিক বাধা-সকলকে আমরা কথার চটকে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করি। নীরব সাধনা ভিন্ন যে কোন কাজ সম্পন্ন হওয়া একেবারে অসম্ভব—এই খাঁটি কথাটি সত্যভারে স্বীকার কর্তে আমরা কুষ্ঠিত হই। কিন্তু অকুষ্ঠিত চিত্তে কেবল গলাবাজীর দাপটে আমরা দু’বেলা দেশোদ্ধার ক’রে থাকি।
বোম্বাই ও কল্কাতার মধ্যে তফাৎ অনেক। বোম্বাই সহরে মালাবার পাহাড়ের রমণীয় সৌন্দর্ঘ্যের মধ্যে এবং সমুদ্রসৈকতে যে