পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাতিগঠনে বাধা—ভিতরের ও বাহিরেন• ১৬৫ সকল সুসজ্জিত, প্রাসাদ, তার প্রায় সকলগুলি আমাদের দেশবাসীর । কিন্তু কলকাতার চৌরঙ্গীতে কালা আদমীর স্থান নেই—তারা থাকে সেই “নেটিভ” কোয়ার্টারে যেখানে আলো ও বাতাস অন্ধকারের মলিনতায় প্রায় ডুবে যায়। বোম্বাই সহরে স্যর দোরাব তাত, স্তর বিঠলদাস ঠাকারস্তে, স্তর ফজলভাই করিমভাই প্রভৃতি—এরাই হচ্ছেন ঐ সুকল প্রাসাদের মালিক। এরা মহাধনী, শিক্ষিত, কতবিদ্য । স্তর বিঠলদাস স্ত্রীশিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে একদিনে ১৫ লক্ষ টাকা দান করেছেন। বাঙলায় এমনু মহাপ্রাণ বণিকরাজ আছে কি ? স্তর ফজলভাই কয়েকট কলের স্বত্ত্বাধিকারী । কোন কোন কলে ১০০ টাকায় ১০০০ টাকা পর্য্যন্ত মুনাফা দিয়েছে। আর আমরা ১৮ লক্ষ টাকা মূলধনের ভাঙা “বঙ্গলক্ষ্মী” নিয়ে, ১৯০৬ সাল । থেকে ১৯২১ পর্যন্ত হাবুডুবু খাচ্ছি। আমাদের অমুসন্ধিৎসা ও কর্ম্মকুশলতা এতই অল্প যে বাঙলায় ২১টি ছোটখাট কল চালাবার জন্যে হয় ইংরেজ, নয় বোম্বাইবাসীকে ম্যানেজার নিয়ে আসতে হচ্ছে । এই ১৪ বছর কেবল চীৎকারে কাটালাম । , যুদ্ধের পূর্ব্বে ম্যাঞ্চেষ্টার হতে প্রতি বৎসর ৩০০ কোটি টাকার নানাপ্রকার কাপড় বিদেশে রপ্তানি হ’ত । তার এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ প্রায় ১০০ কোটি টাকার কাপড় ভারতের বাজারে আস্ত । এই ১০০ কোটি টাকার কাপড় যাদের দরকার তাদের মধ্যে শতকরা ৯৯ জন রিফ্র কৃষক। কোন রকমে লজ্জা নিবারণের , জন্যে আমাদের দেশে এই ১০০ কোটি টাকার কাপড়ের প্রয়োজন। তার মধ্যে কলকাতা হ’তে ৪০/৫০ কোটি টাকার বিলাতী কাপড় বাঙলার বিভিন্ন জেলায়, বিহার 'ও আসামে চালান হয়। এই কোটি কোটি টাকার কাপড় একদিনে গোলদীঘির আন্দোলনে উৎপন্ন হবে কি ?