পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাতিগঠনে বাধা—ভিতরের ও বাহিরের ১৭৩ --~~ স্থান আমরা কোথায় দিয়েছি ? বাঙলার নব জাগরণের দিনে যখন জাতীয় শিক্ষা-পরিষং প্রতিষ্ঠিত হ’ল তখন ব্রজেন্দ্রকিশোর পাঁচ লক্ষ টুকী দিলেন, স্ববোধচন্দ্র এক লক্ষ টাকা দিলেন, স্বর্য্যকান্ত আড়াই লক্ষ দিলেন । আরও অনেকে মাসিক সাহায্য দিলেন । কিন্তু সে সময়ে পৃথিবীতে স্ত্রীজাতি ব’লে যে কেউ আছেন একথা তারা একেবারেই ভুলে গেলেন। মা, ভগ্নী, সহধর্ম্মিণীকে মুখ ক’রে রাখলে কি লাঞ্ছনা হয় তা ত আমরা প্রতিপদে বুঝতে পারছি। তবু ত আমাদের চেতনা হয় না ! ইয়ুরোপীয় যুদ্ধে স্ত্রীলোক কত কাজ ক’রে দিয়েছেন তা আজ সকলেই জানেন। আমাদের ঐ সময়ে স্ত্রীলোকের কাছ থেকে সাহায্য পাবার আশা কতটুকু ? তাদের গণ্ডমূর্খ ও অকেজো পুতুল করে রেখে আমরা সমাজের আধখানা অঙ্গকে পক্ষাঘাতে পঙ্গ ক’রে রেখেছি। স্ত্রীশিক্ষার স্থান ত কোথাও দেখছি না। আর পুরুষের যা শিক্ষা সে ত ডিগ্রী ও চাকরীর লোভে। - আবার লোকশিক্ষার কথা যদি ধরা যায় তাহলে ত বুক শুকিয়ে ওঠে । দেশের শতকরা ৯৫ জন নিরক্ষর। আপনাদের শিক্ষার জন্য আমরা স্কুল কলেজ স্থাপন করছি ; কিন্তু কোটি কোটি লোক ধে অজ্ঞতার স্তপের নীচে চাপা পড়ে মারা যাচ্ছে। তাদের বঁাচাবার জন্যে আমাদের ক'জনের প্রাণ কেঁদেছে ? লোক-শিক্ষার জন্তে স্বদীর্ঘ বক্তৃত হতে শুনেছি, কিন্তু খুব অল্প কর্মেরও প্রতিষ্ঠা হ’তে ত দেখিনি । কিন্তু এই বিপুল জনসঙ্ঘ যদি চিরকালই শিক্ষার আলোক থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে থাকে, তবে কি আমরা আকাশ থেকে জাতিগঠনের উপকরণ সংগ্রহ করবো ? জনসাধারণকে নিয়ে জাতি। জনসাধারণকে বাদ দিয়ে যা থাকে তা অন্য কিছু হ’তে পারে, কিন্তু জাতি কোন কালেই নয়। জাগরণের ঢেউ জনসজ্যের