স্থান আমরা কোথায় দিয়েছি? বাঙলার নব জাগরণের দিনে যখন জাতীয় শিক্ষা-পরিষৎ প্রতিষ্ঠিত হ’ল তখন ব্রজেন্দ্রকিশোর পাঁচ লক্ষ টাকা দিলেন, সুবোধচন্দ্র এক লক্ষ টাকা দিলেন, সূর্য্যকান্ত আড়াই লক্ষ দিলেন। আরও অনেকে মাসিক সাহায্য দিলেন। কিন্তু সে সময়ে পৃথিবীতে স্ত্রীজাতি ব’লে যে কেউ আছেন একথা তারা একেবারেই ভুলে গেলেন। মা, ভগ্নী, সহধর্ম্মিণীকে মূর্খ ক’রে রাখলে কি লাঞ্ছনা হয় তা ত আমরা প্রতিপদে বুঝতে পারছি। তবু ত আমাদের চেতনা হয় না! ইয়ুরোপীয় যুদ্ধে স্ত্রীলোক কত কাজ ক’রে দিয়েছেন তা আজ সকলেই জানেন। আমাদের ঐ সময়ে স্ত্রীলোকের কাছ থেকে সাহায্য পাবার আশা কতটুকু? তাঁদের গণ্ডমূর্খ ও অকেজো পুতুল ক’রে রেখে আমরা সমাজের আধখানা অঙ্গকে পক্ষাঘাতে পঙ্গু ক’রে রেখেছি। স্ত্রীশিক্ষার স্থান ত কোথাও দেখছি না। আর পুরুষের যা শিক্ষা সে ত ডিগ্রী ও চাকরীর লোভে।
আবার লোকশিক্ষার কথা যদি ধরা যায় তাহলে ত বুক শুকিয়ে ওঠে। দেশের শতকরা ৯৫ জন নিরক্ষর। আপনাদের শিক্ষার জন্য আমরা স্কুল কলেজ স্থাপন কর্ছি; কিন্তু কোটি কোটি লোক যে অজ্ঞতার স্তূপের নীচে চাপা প’ড়ে মারা যাচ্ছে। তাদের বাঁচাবার জন্যে আমাদের ক’জনের প্রাণ কেঁদেছে? লোক-শিক্ষার জন্যে সুদীর্ঘ বক্তৃতা হ’তে শুনেছি, কিন্তু খুব অল্প কর্ম্মেরও প্রতিষ্ঠা হ’তে ত দেখিনি। কিন্তু এই বিপুল জনসঙ্ঘ যদি চিরকালই শিক্ষার আলোক থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে থাকে, তবে কি আমরা আকাশ থেকে জাতিগঠনের উপকরণ সংগ্রহ করবো? জনসাধারণকে নিয়ে জাতি। জনসাধারণকে বাদ দিয়ে যা থাকে তা অন্য কিছু হ’তে পারে, কিন্তু জাতি কোন কালেই নয়। জাগরণের ঢেউ জনসঙ্ঘের