পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৪
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

কাছে পৌঁছান চাই। যদি জিজ্ঞাসা করি—কলিকাতার দোকান-পাট বন্ধ হয়েছিল কেন? উত্তর হবে—মহাত্মার হুকুম। “কেন?” “ত জানি না।”[] কিন্তু জাপানে ও ইংলণ্ডে এরকম অজ্ঞতা দেখা যায় না। শতকরা ৯৫ জন পক্ষাঘাতগ্রস্থ হ’লে জাতির দেহে বলসঞ্চারের সম্ভাবনা কোথায়? প্রজাশক্তি যদি জাগিয়ে তুল্‌তে হয় তবে এখন শিক্ষার দীপ গ্রামে গ্রামে জ্বেলে দিতে হবে। তবেই ত রাজনৈতিক আন্দোলন জনসাধারণের ইচ্ছা, শক্তি, ও সহানুভূতির উপর দাঁড়াতে পারবে। এই সত্যটুকু উপলব্ধি করেই পুণ্যশ্লোক গোখ্‌লে জীবনের শেষভাগে প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারের জন্যে কি পরিশ্রমই না করেছিলেন!

 জনসাধারণের শক্তির উপর ভিত্তি নেই ব’লে ভারতবর্ষে অনেক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হ’য়ে গেছে। ইতিহাসে তার ভূরি ভূরি প্রমাণ পাওয়া যায়। রণজিৎ সিংহ বা হায়দার আলির মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সৈন্যদল বিধ্বস্ত হ’য়ে গেল। দেখা গিয়েছে সেনাপতি যেমনই হত হলেন, অমনি সৈন্যদল যুদ্ধক্ষেত্র থেকে খরগোশের মত পালিয়ে গেল। তাই বলি কোন আন্দোলনই শুধু মুষ্টিমেয় শিক্ষিতদের নিয়ে সফল হয় না। জনসাধারণের উপর ভিত্তি না থাকলে সব ইমারত তাসের ঘরের মত ভূমিসাৎ হ’য়ে যায়। আমি কোন ধর্ম্মসম্প্রদায় বা রাজনীতিক দলের উপর কটাক্ষ কর্‌ছি না। আমি দূর থেকে ঘটনাবলি পর্য্যবেক্ষণ ক’রে অভিজ্ঞতার দ্বারা যেটুকু বুঝেছি তাই দেশবাসীকে জানাচ্ছি। আমাদের অনেক গলদ আছে। দেহের মধ্যে যদি দূষিত ক্ষত থাকে


  1. হরতাল কেন?—একথার উত্তর অনেক বেহারা ও “সাধারণ” শ্রেণীর লোক প্রকৃতই দিতে পারেনি। কেবল উত্তর পেলাম—“গান্ধী মহারাজের হুকুম।”