১৷৵৹
য়ুরোপে প্রবাসকালে প্রফুল্লচন্দ্র যখন যেখানে গিয়াছিলেন, তথায় বিশেষ সম্মানলাভ করিয়াছিলেন। এই সময়ে প্রফুল্লচন্দ্রের গবেষণার কথা পৃথিবীময় রাষ্ট্র হইয়া বৈজ্ঞানিকদিগের বিস্ময় উৎপাদন করিয়াছিল। তিনি এখন হিন্দু রসায়নশাস্ত্রের ইতিহাসেরও প্রণেতা বলিয়া সর্ব্বত্র সম্মানিত। তাঁহার আদর্শ চরিত্র য়ুরোপীয়গণের নিকট অপরিজ্ঞাত ছিলনা, তাই য়ুরোপীয় বৈজ্ঞানিকগণ বহু অনুষ্ঠানে তাঁহাকে নিমন্ত্রণ করিয়া সম্বর্দ্ধনা করিয়াছিলেন।
প্রফুল্লচন্দ্র স্বকীয় গবেষণা ও মৌলিক আবিষ্ক্রিয়া দ্বারা য়ুরোপীয় বিদ্বন্মণ্ডলীর নিকষ্ট সম্মানিত; হিন্দু রসায়নশাস্ত্রের ইতিহাস প্রণয়ন ও প্রকাশে তাঁহার যশঃ সর্ব্বত্র পরিব্যাপ্ত; তাঁহার আদর্শচরিত্রে তিনি লোকমাত্রেরই বরণীয়; তাঁহার আদর্শ শিক্ষাপ্রণালীর ফলে দেশে মৌলিক গবেষণার স্রোত প্রবাহিত; কিন্তু আমাদের গবর্ণমেণ্ট তাঁহার গুণ গ্রহণে কতকটা অন্ধ ছিলেন। তাঁহাকে যে প্রাদেশিক শিক্ষাবিভাগে কোণ-ঠেসা করিয়া রাখা হইল, তাহার আর কোন নড়চড় হইল না। প্রফুল্লচন্দ্র তাঁহার সরকারী চাকুরী সম্বন্ধে লিখিয়াছেন, “তিনি ২৫০৲ টাকা মাসিক বেতনে ১৮৮৯ খৃঃ অব্দে শিক্ষাবিভাগে প্রবেশ করেন এবং সেই বেতনে সাত বৎসর কর্ম্ম করার পর, তাঁহার বেতন ৪০০৲ টাকা হয়। আরও সতের কি আঠার বৎসর পরে তাঁহাকে প্রাদেশিক শিক্ষাবিভাগের উচ্চতম সোপানে উন্নীত করা হয় এবং তিনি ৭০০৲ টাকা বেতন পাইতে থাকেন।” স্যার জগদীশচন্দ্র বসু প্রভৃতির মত কার্য্যকুশলতা প্রদর্শন করিয়াও স্থায়ীভাবে উচ্চতম ভারতীয় শিক্ষাবিভাগে (Indian Educational Service) উন্নীত হইতে পারেন নাই।
এই কারণেই পাবলিক সার্ভিস কমিশনে প্রফুল্লচন্দ্র বলিতে বাধ্য হইয়াছিলেন যে,—“It was not consistent with a sense of