দেশে কোন একটি বিষয়ে যথেষ্ট পারদর্শিতা লাভ কর্বার পর যুরোপ যান এবং সেখানে সেই বিশেষ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ মহামহোপাধ্যায়ের নিকট অবস্থান করে’ সেই বিষয়টিই শিক্ষা করেন। আর আমাদের ছাত্রগণ অনেকস্থলে ভিটে মাটী বেচে, কেউ বা বড়লোকের জামাতা হবার লোভে ডিগ্রী লাভের আশায় মুগ্ধ হ’য়ে বিলাত যান। অবশ্য সব ক্ষেত্রেই যে এরূপ ঘটে তা বল্ছি না। এর ব্যতিক্রম আছে নিশ্চয়ই। আমাদের ছাত্র জ্ঞানেন্দ্রচন্দ্র ঘোষ ও মেঘনাদ সাহা বিদেশে একবার জাপানী ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আপনারা কি লণ্ডনের ডিগ্রী নিতে এসেছেন?” তাঁরা জাতীয় গর্ব্বে অনুপ্রাণিত হয়ে বলেন, তাঁরা নিজেদের দেশের ডিগ্রীকে কোন প্রকারে হীন জ্ঞান করেন না। আমাদের দেশেরও উক্ত শ্রীমান্দ্বয় বিলাতি ডিগ্রীর মোহে স্বাদেশিকতাকে খর্ব্ব করেন নি, এ পরম গৌরবের কথা। বাস্তবিক ঐ-সব জাপানী ছাত্র এসেছেন স্যার জোসেফ টম্সন, রাদারফোর্ড প্রভৃতি বিজ্ঞানবিশারদদের নিকট থেকে জ্ঞান অর্জ্জন করবার জন্য, ডিগ্রীলাভের জন্য নয়।
কিন্তু আমাদের কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হ’তে সেই ১৮৫৭ সাল থেকে আজ পর্য্যন্ত যে হাজার হাজার গ্রাজুয়েট উৎপন্ন হয়েছে তাদের মধ্যে ক’জন পৃথিবীর জ্ঞানভাণ্ডারে নিজের কিছু দিতে পেরেছে যা একেবারে মৌলিক ও নূতন, যাতে মানবের জ্ঞান পুষ্টিলাভ ক’রে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেহই যে কিছু দেন নি এমন কথা বল্ছি না। ব্যতিক্রম ত আছেই। কিন্তু তাঁদের আজীবন সাধনার ভিতরের কথা কে বুঝ্বার চেষ্টা করে-কে তাঁদের অহেতুকী জ্ঞানতৃষ্ণার যথার্থ সন্মান কর্তে পারে? এখানে যে সব ছাত্রই ডিগ্রী চাচ্ছেন আর চাকরী কর্ছেন! কোন বিষয়ে কৃতিত্ব ত কেউ দেখাতে