পার্লেন না। অধ্যাপক যদুনাথ সরকার দেশের শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক। আপন রোজ্গারের প্রধান অংশ পুরাতন পার্সী পুঁথি ক্রয় কর্তে ব্যয় করেছেন, পাটনা খোদাবক্স্ লাইব্রেরীতে বৎসরের পর বৎসর ধ’রে নিবিষ্টভাবে অধ্যয়ন করেছেন। তাই মোগলযুগের ইতিহাস সম্বন্ধে তিনি আজ Authority বা প্রামাণ্য পণ্ডিত। তাঁর উপর আর কেউ কথা বল্তে পারেন না, এদেশেও নয়, যুরোপেও নয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রীই এর পাণ্ডিত্যের কারণ নয়—এই কৃতিত্বের পশ্চাতে রয়েছে তাঁর জীবনের সাধনা।
কি কুক্ষণেই শিক্ষিত বাঙালীর চাকরীর দিকে ঝোঁক পড়েছিল। সেই পুরাতন হিন্দুকলেজের ছাত্র হ’তে আরম্ভ ক’রে সকলেই আজ চাকরীর উমেদার। হিন্দু কলেজের ছেলেরা যার মাইকেল-রাজনারায়ণের সমপাঠী—তাঁরা গ্রাজুয়েট হ’লেই প্রথম লর্ড হার্ডিঞ্জের গবর্ণমেণ্ট তাঁদের ডেকে বড় বড় চাক্রী দিতেন। এই সময় থেকে মতিগতি যে চাকরীর দিকে গেল সে আর ফির্লো না। বাঙ্লার ধনে ইংরেজ-মাড়োয়ারীর সিন্ধুক বোঝাই হ’ল, আর বাঙ্লার গোপালেরা শান্ত শিষ্টভাবে ডিগ্রীলাভের সাধনা কর্তে লাগ্লেন। সাধনা—ডিগ্রী, তাই সিদ্ধি-চাকরী!
এইরূপে আদর্শ খাটো হয়ে গেল। তাই গভীর জ্ঞানসাধনা দেশে প্রতিষ্ঠিত হ’ল না। ভাসা-ভাসা জ্ঞানেই বাঙালী যুবক সন্তুষ্ট থাক্তে শিখ্লেন। মল্লিনাথ, বল্লভ, তারাকুমার, সারদারঞ্জন—এইসব টীকার সাহায্যে এক সর্গ ভট্টি, বা রঘুবংশ প’ড়েই সংস্কৃত ভাষায় পণ্ডিত হলেন, কেউ বা আধ সর্গ প্যারাডাইস-লষ্টের নোট মুখস্থ করে’ ইংরেজি সাহিত্য দখল করে’ বস্লেন। কিন্তু লাইব্রেরী থেকে একখানা বাহিরের বই নিয়ে কেউ পড়ে’ দেখ্লেন না—যেহেতু