একালে” এ সম্বন্ধে অনেকগুলি কৌতুকাবহ কাহিনী আছে। একস্থানে তিনি বলিতেছেন,—“ইংরাজদের যে সকল সরকার থাকিত, তাহাদের ভাষা ও কথোপকথন আরো চমৎকার ছিল। একজন সাহেব তাঁহার সরকারের উপর ক্রুদ্ধ হইয়াছেন। সরকার বলিল—মাষ্টার ক্যান্ লিব, মাষ্টার ক্যান ডাই। (Master can live, master can die) অর্থাৎ মনিব আমাকে বাঁচাইয়া রাখিতে পারেন, অথবা মারিয়া ফেলিতে পারেন। সাহেব, “What, master can die?” এই কথা বলিয়া সরকারকে মারিবার জন্য লাঠি উঠাইলেন। সরকারের তখন মনে পড়িল, “ডাই”—শব্দের অন্য অর্থ আছে, তখন “ষ্টাপ্ দেয়ার” (stop there) অর্থাৎ প্রহার করিতে লাঠি উঠাইও না, এই বলিয়া হাত উঁচু করিল, তৎপরে অঙ্গুলি দ্বারা আপনাকে দেখাইয়া বলিল, “ডাই মি” (Die me) অর্থাৎ আমাকে মারিয়া ফেলিতে পারেন “ইফ মাষ্টার ডাই, দেন আই ডাই, মাই কো ডাই, মাই ব্ল্যাক্ ষ্টোন্ ডাই, মাই ফোরটিন জেনারেশান ডাই।” “If master die, then I die, my cow die, my blackstone die, my fourteen generation die.” “যদ্যপি মনিব মারেন, তবে আমি মরিব আমার ‘কো’ অর্থাৎ গরু মরিবে, আমার ‘ব্ল্যাক্ষ্টোন্’ অর্থাৎ বাড়ীর শালগ্রাম ঠাকুর মরিবেন, আমার ‘ফোরটিন জেনারেশান’ অর্থাৎ চৌদ্দ পুরুষ মরিবে।” একবার রথের দিবস এক সরকার কামাই করে। পরদিন সে আসিলে, সাহেব জিজ্ঞাসা করিলেন, “কাল কেন আইস নাই?” সরকার রথের ব্যাপার কিরূপে বুঝাইবে ভাবিয়া আকুল। শেষে বলিয়া উঠিল, “চর্চ্চ” (church)। রথের আকার গির্জার মত, তাই এই কথাটী বুঝাইবার পক্ষে বড় উপায় হইল। কিন্তু “চর্চ্চ” বলিলে ইটের গাঁথুনি বুঝায়, এ জন্য পরক্ষণেই বলা হইল, “উডেন্ চর্চ্চ” অর্থাৎ কাষ্ঠের গির্জা।
পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৪২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বঙ্গীয় যুবক-সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ জীবিকা-অর্জ্জন
২১১