সাত লক্ষ টাকা দিবেন।[১] ইহাতেই বুঝা যায় যে গোবিন্দপুর, সুতানুটী ও কলিকাতা এই তিন খানি গ্রাম ইজারা লইবার পর হইতে ১৭৫৬ খৃষ্টাব্দের মধ্যে সমগ্র কলিকাতায় বাণিজ্য ব্যাপার কি প্রকার বিপুল হইয়া উঠিয়াছিল। বলা বাহুল্য আর্ম্মেণীয়দের প্রাপ্ত সাত লক্ষ টাকা এখনকার ক্রয় বিক্রয়ের মূল্যানুসারে (purchase value) অন্ততঃপক্ষে পঁয়ত্রিশ লক্ষ টাকার সমান হইবে। তাহার পর এই দেড় শত বৎসরের মধ্যে সমগ্র ভারতের আমদানী ও রপ্তানী একত্র করিলে প্রায় সাড়ে তিন শত কোটি টাকায় পরিণত হয়। এই বিশাল বাণিজ্য-ব্যাপারে কয় জন বাঙ্গালী সওদাগর সংশ্লিষ্ট আছেন? আমাদের দেশ হইতে যে সমস্ত শস্য সামগ্রী (কাঁচা মাল) রপ্তানী হয় তাহার সামান্য ভগ্নাংশ মাত্র বাঙ্গালীর হাতে। কিন্তু তাহাও তেলী, তামলী, সাহা, গন্ধবণিক প্রভৃতি শ্রেণীর করায়ত্ত হইয়া রহিয়াছে। যদি এই সকল শ্রেণীর মধ্যে যথেষ্ট শিক্ষার বিস্তার থাকিত তাহা হইলে আমাদের কিছুমাত্র ক্ষোভের কারণ থাকিত না। কিন্তু তাহা না থাকায় ইউরোপীয় বণিকগণ ব্যবসায় চালাইবার যে পদ্ধতি অবলম্বন করিয়া থাকেন ইঁহারা তাহার কোনই খবর রাখেন না। সত্য বটে ইংরাজ আমলের প্রারম্ভে, এমন কি ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্দ্ধে বাঙ্গালীর সহায়তা ব্যতীত ইউরোপীয় সওদাগরগণ (for want of local knowledge) তাহাদের কার্য্য-সিদ্ধি করিতে পারিতেন না; এই জন্যই রামদুলাল দে, মতিলাল শীল প্রভৃতি ক্রোড়পতি হইয়াছিলেন, এবং অপর অনেক অনেক বাঙ্গালী হৌসের মুৎসুদ্দি হইয়া বিপুল অর্থ উপার্জ্জন করিতে পারিয়া-
- ↑ “For the effects plundered from the Armenian inhabitants of Calcutta, I will give the sum of seven lacks of rupees.” [Vide Stewart’s History of Bengal. Appendix, page XX, Article No. VII.]