পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বঙ্গীয় যুবক-সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ জীবিকা-অর্জ্জন।
২১৭

সাধারণ তন্ত্রের মত ছিল। প্রত্যেক গ্রামের কামার, কুমার, ধোবা, নাপিত, যজমান, যাজক স্ব স্ব বৃত্তি অবলম্বন করিয়া জীবিকা-নির্ব্বাহ করিয়াছে; কিন্তু এখন অনেক জনাকীর্ণ সহরের সৃষ্টি হইয়াছে সুতরাং সে নিয়ম ভাঙ্গিয়া চুরিয়া গিয়াছে। এখন কলিকাতায় পয়সা দিলেও খাঁটি দুধ মিলে না, মাছ অগ্নিমূল্য ও দুষ্প্রাপ্য; বর্ষাকালে ধোবার বাড়ী কাপড় দিয়া তিন সপ্তাহ কখনো বা এক মাস হাঁ করিয়া পথ তাকাইয়া থাকিতে হয়। এই হাঁ করিয়া থাকিবার জন্য আমরাই দায়ী, কারণ যেমন অন্যান্য বিষয়ে তেমনি এ বিষয়ে আমরাই নিজেদের অকর্ম্মণ্য করিয়া রাখিয়াছি। পনরো টাকার নকলনবিশির জন্য সাহেবের বড় বাবু ও আফিসের পেয়াদার খোসামুদী করিয়া ছয় মাস কাটাইতে আমাদের লজ্জা বোধ হয় না কিন্তু বৈজ্ঞানিক প্রণালীতেই হৌক বা লোক রাখিয়া বস্ত্র ধৌত করিবার একটা কারবার (laundry) খুলিতে আমাদের সমুদয় সম্মান লোপ পায়। এমন কি আমরা এমনি অসহায় যে নিজেদের কাজটুকুও কোনমতে চালাইয়া লইতে পারি না। এখন বিলাতের মত বড় আয়োজনে (scaleএ) Dairy farming, আমেরিকার মত মৎস্যের চাষ (Pisciculture) শিখিয়া মৎস্য জন্মাইবার চেষ্টা দরকার; তাহার সঙ্গে আবার (laundry farming) কাপড় ধোলাই করিবার কারখানা থাকা চাই। কিন্তু এ সব ব্যাপারে বিদ্যাবুদ্ধি ও সংগঠনী শক্তির সহিত (powers of organisation) যৌথ কারবার খোলা দরকার। কিন্তু আমরা নিশ্চেষ্ট ও অকর্ম্মণ্য হইয়া বসিয়া আছি; সেই সাবেক গোয়ালা, ধোবা ও জেলের উপরেই নির্ভর রহিয়াছে। পদ্মায় অজস্র ইলিশ্ জন্মায় বটে কিন্তু জেলেদের কাছে দাদন দিয়া বরফাবৃত করিয়া রেলগাড়ী যোগে কলিকাতায় পৌঁছিয়া দিবার ভার বৈদেশিকের উপর নির্ভর করিয়া আমরা সুখে নিদ্রা