পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১৮
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

যাইতেছি এবং ব্যবসায়ের মুনফা আমাদের হস্তচ্যুত হইয়া যাইতেছে। এই প্রকারে বাঙ্গালীর কার্য্যক্ষেত্রের পরিসর ক্রমশঃ গুটাইয়া আসিতেছে। যাহা কতক আমাদের জ্ঞাতসারে ও কতক অজ্ঞাতসারে একবার গুটাইতে আরম্ভ করিয়াছে তাহাকে যথাসময়ে ঠেকাইয়া রাখিবার চেষ্টা না করিলে পরে যে কেবল অনুশোচনা করিতে হইবে এ কথা বলাই বাহুল্য। দেখিতে সামান্য অথচ ফলে বৃহৎ এই যে ব্যাপারগুলি এ গুলি আমাদের দৃষ্টি এড়ায় ইহা কোনমতেই বাঞ্ছনীয় নহে।

 আমাদের দেশে যাহাদের আমরা এখন “ভদ্রলোক” বলিয়া থাকি তাহাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন চাকুরী হইয়া দাঁড়াইয়াছে এবং এই চাকুরী জোগাড় করিবার একমাত্র উপায় বিশ্ববিদ্যালয়ের “ছাপ” আদায় করা। সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারে আসিয়া আঘাত করিতেছে। যদি বুঝিতাম যে বিদ্যাশিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধিলাভ করা একই কথা তাহা হইলে আমার কোনও আপত্তি ছিল না কিন্তু এই উপাধিলাভের প্রধান উদ্দেশ্য কেরাণিগিরি বা ওকালতিতে প্রবেশাধিকার লাভ, এ কথা প্রসঙ্গক্রমে পূর্ব্বেই বলা গিয়াছে। শতকরা নিরান্নব্বই জন লোক উপাধিলাভের পর সরস্বতী দেবীর নিকট হইতে চির বিদায় গ্রহণ করেন বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় একটি বিরাট কারখানা বা সুরকির কলে পরিণত হইয়াছে। আমা-ঝামা ও ভাল পোড়ের ইট এক সঙ্গে পেষিত হইয়া সেই সুরকিতে পরিণত হয়। প্রতিভা (Genius)র স্ফূর্ত্তি হয় না। আজকাল দেখা যায় এক এক কলেজে বিশেষতঃ দ্বিতীয় বার্ষিক শ্রেণীতে সাড়ে চারি শত পাঁচ শত ছাত্র। অধ্যাপক ও ছাত্রের সহিত এখানে ব্যক্তিগত কোন সম্বন্ধ স্থাপিত হওয়া অসম্ভব। কেবল টীকা টিপ্পনি গলাধঃকরণ করানো ও percentage