তেঁতুল-জল ও ডাল খেয়ে বারাণ্ডায় চাটাইয়ে ঘেরাও করিয়া সপরিবারে থাকতে পারে বলে বাঙালী কেরাণী অপেক্ষা অল্প খরচে এদের জীবন যাত্রা নির্ব্বাহ হয়। তাই বলি, বাঙালী যায় কোথা?
৫০ বৎসর পূর্ব্বে দেখেছি বেণ্টিঙ্ক স্ট্রীট চীনেরা দখল করেছে। এখন দেখছি, লাল বাজার, ফৌজদারী বালাখানা পর্য্যন্ত এরা এসেছে। জুতোর দোকানী, ছুতোর সব চীনে। এই বাঙলা দেশে ছুতোর ছিলনা এমন নয়। এখন তারা নিরন্ন। চীনেদের অনেক গুণ, তাই আজ তারা বাঙালী ছুতোরকে প্রতিযোগিতায় হারিয়েছে। এরা ফাঁকি দেয় না এবং এদের উপর কাজ দিয়ে ভরসা পাওয়া যায়। বাঙালী মিস্ত্রি কি রাজমিস্ত্রি কি ছুতোর মিস্ত্রি, চোখের আড়াল হলে, হুঁকো নিয়ে বসবে আর কোন কাজ আদায় করা অসম্ভব। চীনেদের মজুরী বেশী কিন্তু সস্তার তিন অবস্থা হয় বলেই লোকে বেশী মজুরী দিয়েও এদের কাজ দেয়। তাই আজকাল পূর্ব্ব ও পশ্চিম বঙ্গে চীনেরাই Contract নিয়ে কাজ করছে। আমাদের দেশের মিস্ত্রিরা দিন আনে দিন খায়। মূলধন কোন তাদের থাকে না এবং সমবেত হয়ে কাজ করবারও এদের ক্ষমতা নাই।
বাল্যকালে অনেক বাঙালীর কাঠের গোলা দেখেছি। এখন চাঁপাতলায় গেলে দেখতে পাওয়া যাবে চীনেরা সব কাঠের গোলার মালিক। আর সাবেক বাঙালী মনিবগণ এখন তাহাদেরই কেরানীগিরি করছে। এইরূপে জীবনের নানা ক্ষেত্রে অবাঙালীর peaceful penetration হচ্ছে। এ একদিনে বোঝা যায় না। ক্ষয় রোগীর মতন তিলে তিলে এই আমাদের মৃত্যু। এই অশিক্ষিত চীনেরা পিকিং, ন্যানকিং ক্যাণ্টন থেকে এসে বিনা মূলধনে আমাদের মুখের অন্ন গ্রাস করছে, আর আমরা চোখ বুজে বসে আছি।