বিদ্যাদানের বিষয়ে আমাদিগকে এরূপ অমনোযোগী হইলে চলিবেনা। ইহার উপর আমাদের জাতীয় জীবনের সমগ্র ভবিষ্যৎ নির্ভর করিতেছে। যাহাতে শিক্ষকদিগের অর্থকষ্ট দূর হয় তাহার জন্য সকলের চেষ্টা করা উচিত। স্কুলের সংখ্যা যাহাতে আরও বৃদ্ধি পায়, শিক্ষা যাহাতে আরও বিশেষ করিয়া জনসাধারণের অনায়াসলভ্য হইয়া উঠে, তাহার জন্য চেষ্টা করা আমাদের প্রত্যেক শিক্ষিত ব্যক্তির কর্ত্তব্য। পুরাকালে অধ্যাপকেরা যেরূপ অল্পে সন্তুষ্ট থাকিতেন, এখনও যে তাঁহারা তাহাতেই সন্তুষ্ট থাকিবেন, তাহা আশা করা অন্যায়। সময়ের পরিবর্ত্তনের সঙ্গে আমাদের জীবনযাপনের প্রণালীরও যথেষ্ট পরিবর্ত্তন হইয়াছে। অনেক নূতন নূতন আকাঙ্ক্ষা আমাদের মনে জাগিতেছে। অভাবও বাড়িয়া চলিয়াছে। সুতরাং এখন আর সেরূপ অল্প টাকায় কাহারও চলিতে পারে না। শিক্ষকদিগের বেতন না বাড়াইলে আমরা যোগ্য শিক্ষকের আশা করিতে পারি না। নিজেদের অন্ন চিন্তার জন্য যদি তাঁহাদিগকে ব্যস্ত থাকিতে হয় তবে শিক্ষকেরা কিরূপে প্রশান্তভাবে শিক্ষাকার্য্যে মনোনিবেশ করিবেন?
ইহাও আমাদের মনে রাখিতে হইবে যে, যে কার্য্যে তাঁহারা ব্যাপৃত আছেন তাহা অতি মহৎ কার্য্য। সমগ্র জাতির ভবিষ্যৎ তাঁহাদের উপর পরোক্ষভাবে নির্ভর করিতেছে। অর্থের দিক দিয়া সমাজে তাঁহাদের সম্মান কি আসন ঠিক করিলে চলিবে না। যে গুরুভার তাঁহাদের উপর ন্যস্ত সে দিকে আমাদের দৃষ্টি থাকা চাই। আমাদের বুঝিতে হইবে, যে, ইহার ন্যায় মহৎ কার্য্য আর নাই। যাঁহারা এই কার্য্যে মন ঢালিয়া দিয়াছেন, তাঁহারা সকলের পূজ্য ও শ্রদ্ধার পাত্র।