পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪৮
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

 এ সম্পর্কে একটা কথার উল্লেখ করিতে হয়। আমাদের দেশে পূর্ব্বকালে অধ্যাপকবর্গের সমাজে যেরূপ সম্মান ও প্রতিপত্তি ছিল, আজকাল শিক্ষকবর্গের তাহার কিছুই নাই। এইরূপ শিক্ষকের সম্মান হ্রাস হওয়া যে দেশের দুরদৃষ্ট তাহাতে আর কোনও সন্দেহ নাই। আমাদের সদা সর্ব্বদা মনে রাখিতে হইবে যে শিক্ষকের বৃত্তি কখনও বাণিজ্যাদি অন্যান্য বৃত্তির ন্যায় লাভজনক হইতে পারে না। কাজেই যদি আমরা চাই যে বুদ্ধিমান ও চরিত্রবান যুবকগণ অন্যবৃত্তি ত্যাগ করিয়া শিক্ষকবৃত্তি অবলম্বন করিবেন, তাহা হইলে দেখাইতে হইবে, সমাজ শিক্ষকের আর্থিক দৈন্য সম্মানের প্রাচুর্য্য দ্বারা ঢাকিয়া দিতে সম্মত আছে।

 পূর্ব্বেই বলিয়াছি যে, আমাদের স্কুলের দুরবস্থার প্রতি আমাদের গবর্ণমেণ্টের নজর পড়িয়াছে; শিক্ষা বিভাগের উন্নতির জন্য তাঁহারাও মনোনিবেশ করিয়াছেন। তবে আমাদের দুর্ভাগ্যের কথা এই যে, অনেক সময়ই দেখা যায়, শিক্ষকের মাহিয়ানা কিম্বা সংখ্যা বৃদ্ধি করা অপেক্ষা ইন্সপেক্টরের সংখ্যা বৃদ্ধি করা যৈন কার্য্যকর বলিয়া গবর্ণমেণ্ট মনে করেন। তাঁহাদের মতে উপযুক্ত তত্ত্বাবধানের অভাবে আমাদের স্কুলগুলিতে আমাদের আশানুরূপ ফল ফলিতেছে না। বৎসরে একদিন কি দুইদিন স্কুলটী পরিদর্শন করিয়া আসিলে কিরূপ তত্ত্বাবধান হয় তাহা আমরা বুঝি না। তাহা ছাড়া ইন্সপেক্টরেরা যে মন্তব্য প্রকাশ করেন তদনুযায়ী কাজ করা, আর বিধবার একাদশী করা দুইই সমান। করিলে লাভ নাই, না করিলে ক্ষতি যথেষ্ট। এইরূপ পরিদর্শনের প্রাচুর্য্যের ফলে হইয়াছে এই, স্কুলের কর্ত্তৃপক্ষের নজর আজকাল কোনক্রমে বাহিরের ঠাট বজায় রাখিবার দিকে। ভিতরে যথার্থ