পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৫৮
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

তাহা পাঠ করা। শিক্ষকতা কার্য্য অত্যন্ত কঠিন ও অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ, এই কার্য্যের জন্য বিশেষভাবে পাঠ ও চিন্তা না করিলে কেহ প্রকৃত শিক্ষকপদবাচ্য হইতে পারেন না।

 প্রসঙ্গক্রমে এক্ষণে আমি শিক্ষাসংক্রান্ত দু-একটা কথার উল্লেখ মাত্র করিতে চাই। আমাদের স্কুলে বালকগণের শারীরিক বৃত্তিগুলির অনুশীলনের কোনও ব্যবস্থা নাই বলিলেই হয়। যাহাতে ছেলেরা মাঝে মাঝে দশবিশ মাইল হাঁটিতে পারে, দু—চার মাইল দৌড়িতে পারে, দু—এক মাইল সাঁতার কাটিতে পারে, বা দশ পনেৱ মাইল দাঁড় বাহিতে পারে, তাহার বন্দোবস্ত থাক। উচিত। শরীরকে সবল ও কষ্টসহকরা যে কত প্রয়োজনীয়, বর্ত্তমান ইউরোপীয় মহাযুদ্ধে তাহা প্রমাণ হইতেছে।

 এক্ষণে সভ্যজাতিগণের সকল সুস্থ যুবককেই সৈন্যশ্রেণীভুক্ত হইয়া দেশের সম্মান রক্ষা করিতে হইতেছে। আমাদের গভর্ণমেণ্ট বাঙ্গালীকেও সৈনিক হইবার সুযোগ প্রদান করিয়াছেন। সুতরাং আজকালকার দিনে সৈনিকোচিত সুপটু দেহ নির্ম্মাণ করা যে সকল যুবকেরই অবশ্য কর্ত্তব্য তাহা কি আর বলিয়া দিতে হইবে?

 মানসিক শিক্ষা সম্বন্ধে কয়েকটী কথা পূর্ব্বেই বলিয়াছি। নৈতিক শিক্ষা সম্বন্ধে সর্ব্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয় কথা হইতেছে চরিত্র গঠন। উহা কয়েকখানি নীতিপুস্তক পাঠ বা কিছু উপদেশ প্রদান দ্বারা সম্পন্ন হইবার নহে। দিনের পর দিন পরোপকার, চিত্তের পবিত্রতা রক্ষা ও ভগবচ্চিন্তা প্রভৃতি কয়েকটা সৎ অভ্যাস পালন করা হইলে কালক্রমে আদর্শ চরিত্র গঠিত হইয়া থাকে। প্রত্যেক ছাত্রের উচিত প্রতিদিন কিছু না কিছু ভাল কাজ করা, যেমন কোনও স্বার্থত্যাগ করা বা ক্রোধাদি কোন রিপুর দমন করা, আর্ত্তত্রাণ হেতু বীর্য্য প্রদর্শন করা,