১৩
পাঠাগার ও প্রকৃত শিক্ষা[১]
এমার্সন বলেন “গোলাপ বাগান কার?—আমার; আমার দেখে সুখ, চোখের তৃপ্তি, হৃদয়ের আনন্দ! বাগানের মালিক বেড়া বাঁধান, মালি রাখেন, জল সেচন করেন; সে অনেক কাণ্ড। কিন্তু অমন শোভা কাহারও একার নয়।” কারণ গোলাপের সার্থকতা ফুটে, সৌন্দর্য্যের বিকাশ ক’রে। আর সে সৌন্দর্য্য দর্শক মাত্রেই উপভোগ করতে পারেন। কথাটি পাঠাগার সম্বন্ধেও সত্য। পাঠাগারের যাঁরা উদ্যোগী তাঁরা পয়সার যোগাড় করবেন, জমি কিনবেন, ঘর তুলবেন; তারপর উৎকৃষ্ট পুস্তকরাশি সংগ্রহ ক’রে জনসাধারণের হাতের কাছে এনে দেবেন। সে পুস্তকের অধিকার কারো একার নয়। পাঠক মাত্রেই তার সৌন্দর্য্য রস উপভোগ কর্তে পার্বেন। এই গ্রন্থশালা জ্ঞানলিপ্সুদের বড় আদরের জিনিষ।
জ্ঞানের অনুশীলন আমি ক’রে থাকি। আমি আজীবন ছাত্রভাবে আছি। আমার শৈশব, কৈশোর, যৌবন কখন চ’লে গেছে বুঝ্তে পারি নি। আজ বার্দ্ধক্যে পা দিয়ে আমি সেই ছাত্রই আছি। আমি দিনের মধ্যে দু ঘণ্টা নিভৃতে ভাল পুস্তককে সঙ্গী ক’রে কাটিয়ে দি,—দিন সার্থক হয়। জগতে যা কিছু সৎচিন্তা, উৎকৃষ্ট ভাব আছে, যা কিছু উদ্দীপনা সৃষ্টি করে এবং মানুষের হৃদয়ে প্রেরণা দেয়, তার সবই পুস্তকে নিহিত। উপনিষদ্ ও ষড়্দর্শনের তত্ত্ব, গ্রীসদেশের সক্রেটীস্, প্লেটো ও আরিষ্টটল্ প্রভৃতি মহানুভবগণের চিন্তারাশি, এবং পৃথিবীর অন্যান্য
- ↑ কলিকাতার উপকণ্ঠ কস্বা (বালিগঞ্জ) লাইব্রেরীর বাৎসরিক উৎসবে প্রদত্ত উপদেশের সারাংশ। শ্রীরতনমণি চট্টোপাধ্যায় কর্ত্তৃক বিবৃত।