Workingmen’s Institute অর্থাৎ শ্রমজীবীদের জন্যে বড় বড় বিদ্যামন্দির ও গ্রন্থশালা খুলে দিলেন। সমস্ত দিন কলকারখানায় খেটে সন্ধ্যার পর তারা এইসব পাঠাগারে নানারকমের বই, খবরের কাগজ প্রভৃতি পাঠ করে। সেখানে তারা চা, কাফি খায়,—মদ নয়; ইংলণ্ড ও আমেরিকায় মদের বিষময় ফল ফলে। শ্রমজীবীদের পাঠাগারের জন্যে কার্ণেগী অনেক বড় সহরে সাড়ে সাত লক্ষ ক’রে টাকা দিয়েছেন। ইংলণ্ড, আমেরিকা, জাপান প্রভৃতি দেশে এ রকম পাঠাগার স্থাপিত হ’তে আরম্ভ হয়েছে। সে সব দেশে মুটে, মজুর, গাড়োয়ান কাগজ পড়্ছে, রাজনীতি আলোচনা ক’র্ছে। যারা মাটীর নীচে খনিতে কাজ করে তারাও কাগজ পড়ে। চাকরাণী, মেথরাণীও দেশের খবর রাখে। জাপানেও তাই। রবিবাবু বল্লেন—জাপানে তাঁর বাসার দাসী তাঁর গীতাঞ্জলির খবর রাখে। দেখুন এই সব জায়গায় জ্ঞানস্পৃহা কত বলবতী। আর আমাদের দেশের দিকে চেয়ে দেখুন। যে বই কেনে সে পড়ে না, আর যার পড়বার ইচ্ছে আছে তার কেন্বার পয়সা জোটে না। তারপর বই চেয়ে নিয়ে গিয়ে ফেরত দেয় না—ওজর দেখায় অমুক নিয়ে গেছে। এই রকমে দিন কতক কাটিয়ে দিয়ে শেষ বইখানার অস্তিত্ব বিলোপ ক’রে দেয়। এই রকম জঘন্য আচরণে লাইব্রেরী উজাড় হ’য়ে গেছে শুনেছি।
বাঙ্গালী গয়না গড়াবে, চাঁদনীতে নানা ফ্যাসানের কাপড় কিন্বে, নানা রকম বিলাসে পয়সা নষ্ট করবে, কিন্তু পুস্তকে নয়! মান্দ্রাজে দেশীয় লোকের খুব বড় পুস্তকের দোকান আছে। উদাহরণ স্বরূপ— গণেশ কোম্পানী ও নটেশন্ কোম্পানীর নাম করা যেতে পারে। নটেশন্ মোটর চড়েন। প্রথম দেখে মনে হয়েছিল বইএর দোকান ক’রে মোটর হাঁকাচ্ছেন অর্থাৎ পৈতৃক সম্পত্তির অপচয় কর্ছেন।