পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১৪

অধ্যয়ন ও জ্ঞানলাভ

 আমি এখন নিজেকে ছাত্র ব’লে গণ্য করি। ঐ জীবন ত্যাগ ক’রে একদিনও অন্য জীবনে পদার্পণ করেছি বলে মনে হয় না। “ছাত্রাণাং অধ্যয়নং তপঃ”—বাস্তবিক এই ঋষিবাক্য বড় সত্য—বড় সার কথা। আর আমাদের এই ছাত্রজীবন ও গার্হস্থ্যজীবনের পার্থক্যের প্রাচীর বড়ই অমঙ্গলকর।

 ইউরোপীয় অবস্থাপন্ন লোকের একটি ষ্টাডী অর্থাৎ পাঠাগার থাকে। সেখানে প্রবেশ কর্‌বার অর্থ এই—আর যেন কেউ না দেখে বা ঢোকে। যেমন আমাদের দেশের ঠাকুর-ঘর। ভক্ত সেখানে আপন মনে সাধনা করেন, হৃদয়দেবতাকে ভক্তির অর্ঘ্য দান করেন—কিন্তু তা লোকচক্ষুর অন্তরালে—আর কেহ দেখে না। আমাদের পাঠাগারকে ঠাকুরঘরের পবিত্রতায় মণ্ডিত কর্‌তে হবে, তাকে নিভৃতে স্থাপন কর্‌তে হবে—যেন চপলতার গোলমাল সেখানে না পৌঁছায়।

 আমাদের দেশে অনেক ছাত্র বাড়ীতে থাকেন, আবার অনেকে মেসে থাকেন। এখানে ছাত্রের প্রধান বিপদ এই যে তার কোন স্বতন্ত্র পাঠাগার থাকে না। বড় লোকে বড় বাড়ীতে থাকেন—নানাকার্য্যের বন্দোবস্তের জন্য তাঁদের অনেক ব্যয় কর্‌তে হয়। কিন্তু বাড়ীর ছেলে কিরূপে কোলাহলের বাইরে নির্জ্জনে ব’সে পড়্‌বে সাধারণতঃ কোন বাড়ীতেই তার বন্দোবস্ত থাকে না—এরূপ বন্দোবস্ত যে থাকা দর্‌কার তাও কেউ ভাল করে উপলব্ধি করেন না। আর