বমি। পরীক্ষার পরই সরস্বতীর সঙ্গে সকল সম্বন্ধ লোপ আর পাশ হ’লে ‘হকার’ চাচার দোকানে পুস্তক বিসর্জ্জন। মনে পড়ে ছেলে-বেলায় জ্বর হ’ত, আর কেবল মিছরী, বেদানা ও কুইনীন্ খেতে হ’ত। বাল্যজ্বর মনে করিয়ে দেয় ব’লে ঐজিনিসগুলোয় আমায় একটা ভয়ানক বিতৃষ্ণা আছে—ও-গুলো আমার কাছে বিভীষিকা! পাশকর্বার পর এদেশের ছাত্রদের পুস্তকের উপর ঠিক্ ঐ রকমই তীব্র বিতৃষ্ণা হয়—বইগুলো তাদের কাছে আতঙ্ক উপস্থিত করে। পুস্তককে আজীবন সঙ্গী কর্তে হবে, কিন্তু আশ্চর্য্য এই যে পরীক্ষার পর বই আর পাবার জো নাই! শিবনাথ শাস্ত্রী মহাশয় একবার কোন ছাত্রকে বলেছিলেন ‘ব্ল্যাকীর “সেল্ফ্ কাল্চ্যর” বইখানা দাও ত।’ সে জবাব দিলে ‘সে বই তালা বন্ধ, দেখ্লে ভয় হয়।’ এ বড় দুঃখের কথা। সৎপুস্তককে আজীবন সহচর কর্তে হবে, আজীবন ধ’রে সৎপুস্তক পাঠে ভাব সংগ্রহ কর্তে হবে, হৃদয়ে উদ্দীপনা জাগিয়ে রাখতে হবে এবং প্রকৃত জ্ঞানের অনুশীলন কর্তে হবে। ইংরেজ কবি সাদি পুস্তককে লক্ষ্য করে যথার্থ ই বলেছেন—
“The mighty minds of old”
“My never-failing friends are they.”
পুস্তক পাঠের উদ্দেশ্য সফল কর্তে হ’লে খুব বেশী বই পড়্বার দরকার হয় না। অনেকে যা পায় তাই পড়ে, পরিণত বয়সেও তাদের এই অভ্যাস থেকে যায়। তারা কখনও পুস্তক নির্ব্বাচন করে পড়ে না। ছুটী পেলে তারা অনেক রকমে অনেক পয়সা ব্যয় কর্বে। বেড়াবার সখ মেটাবার জন্যে দামী পোষাক, ট্রাঙ্ক, গ্লাড্ষ্টোন্-ব্যাগ কিন্বে, কিন্তু ছুটীতে পড়্বার জন্যে কি বই সঙ্গে নিয়ে যাবে কখনই তার কিছু স্থির