পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮২
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

আরও অনেক রকম পতঙ্গ আছে যারা ফসলের বড় কম ক্ষতি করে না। ইনি তাদেরই জীবনচরিত আলোচনা কর্‌ছেন আর কিসে তাদের নষ্ট করে শস্য বাঁচানো যায় তার উপায় আবিষ্কার কর্‌বার চেষ্টা করছেন। এই সকল ব্যাপারের আলোচনা ও অধ্যয়ন আমাদের ব্যবসা ও ধনাগম সম্বন্ধে অনেক সাহায্য করে। যাঁরা পতঙ্গবিজ্ঞান অধ্যয়ন করেছেন, তাঁরা কি করে তুঁতপোকাকে রোগের হাত থেকে রক্ষা করে বর্দ্ধিত কর্‌তে হয় তা জানেন। গুটিপোকার রোগ হলে তা থেকে ভাল রেশম হয় না। ফ্রান্সে “Disease of Silkworm” অর্থাৎ গুটিপোকার রোগ সম্বন্ধে পুস্তক প্রকাশিত হইয়াছে। সেই বই পড়ে যাঁরা রেশমের চাষ করেন, তাঁরা গুটিপোকাকে বর্দ্ধিত কর্‌বার নানারকম উপায় জানতে পেরেছেন, আর সেই কারণে রেশমের চাষে খুব লাভবান হয়েছেন। আর আমাদের দেশে মুর্শিদাবাদ ও বহরমপুরে—যেখানকার উৎকৃষ্ট রেশম এক সময়ে সব দেশে আদৃত হ’ত—সেখানে রেশমের চাষ দিন দিন উঠে যাচ্ছে; কারণ আমরা ঐ কাজ অজ্ঞ চাষাদের হাতে ফেলে রেখে দিয়েছি, যাদের গুটিপোকা সম্বন্ধে খুব বেশী কিছু জ্ঞান নেই।

 এই-সমস্ত কারণেই বল্‌ছি যে শেখবার অনেক আছে, শুধু কেতাব পড়্‌লেই হয় না। আমি এলবার্ট স্কুলে পড়তাম। সেখানে প্রত্যেক শনিবার কেশবসেনের বক্তৃতা হত। তিনি এক সময়ে বলেছিলেন, “বাঙ্গালীর ছেলের লেখাপড়া শেখা যেন বালিসের খোলে তূলো পুরে দেওয়া; কেবল ঠাসো আর গাদো।” তার উপর অভিভাবক সর্ব্বনাশ কর্‌ছেন—স্কুলের ছুটি হলেই মাষ্টারবাবুকে ছেলের পিছনে লেলিয়ে দেবেন, ছেলে বিদ্যে শিখ্‌বে। এঁরা হচ্ছেন murderer of boys অর্থাৎ বালকহন্তা; কারণ স্কুলের ছুটির পর