অন্ততঃ দুই বা আড়াই ঘণ্টা খেলা চাই। সে সময়টা খোলা মাঠে ছোটো, দৌড়াও, লাফাও, নদীতে নৌকা বাও। তবে ত স্বাস্থ্য থাকবে, মনে প্রফুল্লতা আসবে। তা নয়, বাড়ী এসেই কেতাব নিয়ে বসো। তার পর কোন্ ছেলে কোন্ বিষয়ে backward অর্থাৎ কাঁচা, অমনি প্রাইভেট টিউটর লাগাও,—ইংলিশে একটী, সংস্কৃতে একটি, সর্ববিষয়ে একটি একটি। টিউটরের ঠেলায় বেচারি ছাত্র একেবারে dull অর্থাৎ গাধা হয়ে ওঠে, নিজে ভাব্বার বা নিজের উপর নির্ভর কর্বার শক্তি তার একেবারে লোপ পায়। তাই বলি এ প্রথার অনেক দোষ! এমার্সন বলেন, “Guardians’ are benefactors but sometimes they act like the worst malefactors,”—অভিভাবকগণ ছেলের উপকার করেন বটে, কিন্তু সময়ে সময়ে ভয়ঙ্কর অপকার সাধন করে থাকেন। বেশী পড়্লেই বিদ্যে হয় না, আমি আজীবন ধরে সামান্য একটি বিদ্যা আয়ত্ত করবার চেষ্টা কর্ছি, কিন্তু পাঠ ঐ একঘণ্টা।
আমাদের বাঙ্গালীর ছেলের জীবন যেন একটা ভার বওয়া। বেদান্ত-মতে জীবন কিছুই নয়, দুহাজার বছর ধরে আমরা চিরকাল শুনে আস্ছি, জীবন মানে কিছুই নয়—নলিনীদলগতজলমিব—এর একটা প্রভাব জাতীয় চরিত্রে ত আছেই। আমরা সকলেই খানিকটা স্বীকার করে নিই যে জীবন একটা দুর্ব্বহ ভার। তার উপর আবার এই ভয়ঙ্কর জীবনসংগ্রাম। সকালে আটটার সময়, বাড়ী থেকে দৌড়োদৌড়ি করে ম্যালেরিয়া-জীর্ণ শরীরখানি নিয়ে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করা অর্থাৎ কলম-পিষে জীবিকা-অর্জনের জন্য সহরের দিকে ছুটোছুটি করা। দিন যে কোথা দিয়ে চলে যায়, দুর্ভাগ্য বাঙ্গালী তা জানতে পারে না— পৃথিবীর কোন আনন্দই সে