পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮৪
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

উপভোগ করে না। আকাশের উন্মুক্ততা, আলোকের হাসি বা বাতাসের সুখময় স্পর্শ কিছুই তার প্রাণে সজীবতা ও নবীনতা আনয়ন করে না। লাবকের ‘জীবনের সুখ’ নামে একখানি পুস্তক আছে। ঐ পুস্তকে তিনি বলছেন—জীবন কি শুধু ঔষধ গেলা? জীবনে আনন্দ উপভোগই বিধাতার উদ্দেশ্য। কিন্তু আমরা কর্ম্মদোষে সেই উদ্দেশ্য বিফল করি। পাখী গায় কেন, প্রজাপতি মধু আহরণ করে কেন, যদি বিধাতার সৃষ্টিতে আনন্দ না থাকে।

 লাবক একজন ধনী, মহাজন (broker) ছিলেন। অতুল তাঁহার ধন ঐশ্বর্য্য, কিন্তু তিনি লেখাপড়া যথেষ্ট জান্‌তেন। তিনি আজীবন ছাত্র (“student”)। অনেক ইউরোপীয় ধনী মৌমাছি পিঁপ্‌ড়া প্রভৃতি সম্বন্ধে অনেক নূতন কথা আবিষ্কার করেছেন। আমরা তা বই পড়ে জানি, কিন্তু তাঁরা নিজের চোখে দেখে ঐসব কথা লিখে গেছেন। আমরা চোখ থাক্‌তেও অন্ধ। শুধু চোখ থাক্‌লেই হয় না, সূক্ষ্ম দর্শন চাই। ইউরোপীয়ান লেখক লাবক মৌমাছিদের সাধারণতন্ত্র (Republic) সম্বন্ধে এক চমৎকার বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন। মৌচাকে কেমন করে সকলে কাজ করে সে অদ্ভূত বিবরণ পড়্‌লে মাতোয়ারা হয়ে উঠ্‌তে হয়। লর্ড এভ্‌বেরী (Sir John Lubbock) যে শুধু ধনী ছিলেন তা নয়, কিন্তু তিনি একজন বিখ্যাত পণ্ডিত ও চিন্তাশীল লেখক। আমাদের দেশের ধনী সাধারণতঃ জবড়্‌জং জানোয়ার হয়। তার নাকের ডগা থেকে ওলন- দড়ি ঝুলিয়ে দিলে ভুঁড়ির দরুণ Perpendicular অর্থাৎ লম্ব রেখার যে বিচ্যুতি হয় তাই তাঁর ধনশালিতার মাপ। ধনী জুড়ি চড়েন আর আয়েসে বিলাসে ডুবে থাকেন। কিন্তু ইউরোপে অনেক স্থলে এরূপ হয় না। বিলাতে মাটির তলায় রেল (under-ground railway) আছে। তাতে