পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাতীয় বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা
২৯৯

“টোপাকুল ও আইমার কাছে যাব” গল্প জানেন। স্বামী যতই শিক্ষিত হউন না কেন তাহাতে দেশের ও সমাজের কিছুই উপকার হইবে না যতদিন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে এমন একটা উচ্চ প্রাচীর ব্যবধান থাকিবে যাহা কখনই উল্লঙ্ঘন করা যাইবে না। আপনারা ‘আলো ও ছায়া’ প্রণেতার সেই কবিতাটী জানেন “তোমাতে আমাতে মিলন, আলোক-আঁধারে যেমন”। স্ত্রী-শিক্ষা না হইলে কিছুতেই চলিবে না। গ্রামে গ্রামে স্ত্রী শিক্ষা চাই। নেপোলিয়ান বলিয়াছিলেন ফ্রান্স দেশে যতদিন না মা তৈয়ার হইতেছেন, ততদিন ফ্রান্সের উন্নতি অসম্ভব। আমাদের দেশেও সেই অবস্থা। গ্রামে গ্রামে অন্ততঃ নিম্ন প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয় থাকা নিতান্ত প্রয়োজন

 খদ্দর—

 চরকা ধরুন। ঘরে ঘরে তূলার চাষ করুন। সেদিন অন্ধ্রদেশ হইতে আসিয়াছি। সেখানে শতকরা ৯৫ জন খদ্দর পরেন। আমরা বেশী সুসভ্য, তাই খদ্দর পরি না। তাহাদের ক্ষেতে তূলা উৎপন্ন হয়, তাহারা বাঙ্গালীর মত এত সুসভ্য নয়। আমরা যে বেশী সুশিক্ষিত হইয়াছি। মিহি কাপড় না হইলে পরিতে পারি না। ইঁহারা বলেন খদ্দর খুব ভারী। ইঁহাদের ফিন্‌ফিনে ধুতি চাই। আমি জিজ্ঞাসা করি মা লক্ষ্মীদের গহনার ওজন কত? কেরাণীবাবুদের ধড়াচূড়া হ্যাট কোট ইত্যাদির ওজনই বা কত? যত দোষ এই খদ্দরের বেলায়। বিলাতী কাপড় পরিলে টাকাটা জন্মের মত দেশ হইতে বিদায় দিলাম। হাতের সূতা গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় যে তন্তুবায় আছে, জোলা আছে, তাহারা বুনিবে। গ্রামের টাকা গ্রামেই থাকিয়া যাইবে। অনেকে বলেন মিলের কাপড় পরিলেই ত হইল। কিন্তু তাহাতে কি হইবে? টাকাটা বোম্বাই কি আমেদাবাদে চলিয়া গেল। ঠিক মহাজনের