পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাতীয় বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা
 ৩০৩

মুসলমানগণ এদেশে আসিয়া এই মূলমন্ত্র প্রচার করিলেন তখন সকলে দলে দলে গ্রামের পর গ্রাম আসিয়া মুসলমান হইতে লাগিল। তাহাদের আমির ফকীর একসঙ্গে উপাসনা করেন। বাদসাহ যেখানে উপাসনার জন্য বসিবেন একজন গরীব ডিস্তিওয়ালাও সেইখানে উপাসনার জন্য বসিবে। দেখুন দেখি তাহদের মধ্যে ভ্রাতৃভাব কতখানি! কত বড় সমতা! ইসলাম ধর্ম্ম বলিয়া পরিচয় দিলে সব এক। এক পাত্র হইতে খাইতে হইবে। আরব দেশে মুসলমান অতিথিকে ভিন্ন পাত্রে খাইতে দিলে তাহার অবমাননা করা হয়। আমাদের বার রাজপুত ত তের হাঁড়ি। কপটতা সহ্য হয় না। আমরা যে কত পাপ করিতেছি তাহা বলিবার নয়। সেনসাস্‌ দেখিলে বুঝিতে পারিবেন মুসলমানের সংখ্যা বাড়িতেছে। ৫০ বৎসর পরে গঙ্গার ওপারে—এদিকে নয়-সব মুসলমান হইয়া যাইবে। ভেদনীতিতে দেশ দুর্ব্বল বই সবল হইবে না। ব্রাহ্মণ কায়স্থের উচিত নিম্নশ্রেণীকে আলিঙ্গন করা। হিন্দুজাতি যে ধ্বংসোন্মুখ! ভগবানের নিকট কেহই উচ্চ নয় কেহই নীচ নয়। চণ্ডালোহপি দ্বিজ শ্রেষ্ঠ। এখন সকলকে আলিঙ্গন করিতে হইবে। যদি হিন্দুজাতি বাঁচিয়া থাকিতে চায় তবে আপনি মাহিষ্য হউন বা যাহাই হউন না কেন ভাই ভাই বলিয়া আলিঙ্গন করিয়া থাকিতে হইবে। এই যে আমাদের দেশাত্মবোধ জাগ্রত হইয়াছে ইহা শুভ চিহ্ন বুঝিতে হইবে। যদি আত্মকলহ থাকে তবে চিরকালই পরের অধীন হইয়া থাকিতে হইবে। যাহাতে ধরাপৃষ্ঠ হইতে হিন্দুজাতি বিলুপ্ত না হয়-তাহারই চেষ্টা করিতে হইবে। যাঁহারা অনুন্নত আছেন তাঁহারা কতকটা উঠুন আর যাঁহারা উন্নত আছেন তাঁহারাও কতকটা নামুন। তাই মহাত্মা গান্ধী বলিয়াছেন “যদি স্বরাজ চাও তবে অস্পৃশ্যতা দূর কর”। বিবেকানন্দ বলিয়াছেন,