পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০৬
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

জ্ঞানপিপাসুর যে, কতপ্রকার সম্বন্ধ বিষয় ছড়াইয়া রহিয়াছে, তাহা কে নির্ণয় করিবে? বাঙ্গালার দয়েল, বাঙ্গালার পাপিয়া, বাঙ্গালার ছাতারের জীবনের কথা কে লিখিবে?

 এতদিন পরে ১৩২৮ বঙ্গাব্দে এই প্রশ্নের সদুত্তর পাইয়াছি। প্রেসিডেন্সী কলেজের ভূতপূর্ব্ব ছাত্র শ্রীমান সত্যচরণ লাহার “পাখীর কথা” আমাকে যেন এক নূতন আশার বাণী শুনাইয়াছে, পুস্তক খানি পাইয়া আমি আদ্যোপান্ত পড়িয়া ফেলিলাম। পড়িতে পড়িতে যুগপৎ আনন্দে বিস্ময়ে এমন অভিভূত হইলাম যে, কিছুকালের জন্য আমার প্রিয় রসায়ন-শাস্ত্র-চর্চ্চার কথা বিস্মৃত হইতে হইল। আমাদের দেশে যাঁহারা ধনীর সন্তান হইয়া জন্ম গ্রহণ করেন, তাঁহারা তাঁহাদের “কর্ম্মহীন সুদীর্ঘ অবসরে” কি প্রকারে কালাতিপাত করেন, তাহা পাঠকবর্গের অবিদিত নাই। বহিখানি পাঠ করিয়াই বুঝিতে পারিলাম যে, ইহার রচয়িতার দৈনন্দিন জীবনের Atmosphere (বেষ্টনী) ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিজ্ঞান সাধনার অনুকূল। ইচ্ছা হইল, একবার স্বচক্ষে তাহা ভাল করিয়া দেখিয়া আসি। যে পক্ষিভবনে (Aviary) তাঁহার সযত্ন সংগৃহীত বিহঙ্গগুলি উদ্যানমধ্যে পালিত হইতেছে, তাহা দেখিবার জিনিষ; যে লতাকুঞ্জের অভ্যন্তরে ময়ূরগুলি বিচরণ করিতেছে, তাহা দর্শকের চক্ষু এড়াইতে পারে না। পুষ্পভবনে বিচিত্র বিদেশী পরগাছা (Orchid) শোভা পাইতেছে। স্বতন্ত্র বড় বড় পিঞ্জরে ছোট বড় পাখী সেবা পাইতেছে। তাঁহার পাঠাগারের ও বসিবার ঘরের দেওয়ালে তাঁহারই নির্দ্দেশমত অঙ্কিত বড় বড় চিত্রে পাখীর জীবনলীলা ফুটাইয়া তোলা হইয়াছে। কাচের আলমারীর মধ্যে বিহঙ্গ-শব Stuffed হইয়া যেন জীবন্ত ভাব ধারণ করিয়া আছে; শুনিলাম, তাহার অনেকগুলি শ্যাংহাই হইতে আনীত। জীবন্ত পাখী সম্মুখে রাখিয়া তাহার