ধারাবাহিকরূপে উহার জীবন-রহস্য উদ্ঘাটনের নিমিত্ত আপনাদিগের জীবন উৎসর্গ করিয়াছেন।”
য়ুরোপবাসীদিগের মধ্যে যাঁহারা পুরাকালে ভারতবর্ষে সিভিলসার্ভিস্ এ প্রবেশলাভ করিয়া উচ্চপদস্থ হইতেন, তাঁহাদের মধ্যে অনেকেই উচ্চাঙ্গের পক্ষিতত্ত্ববিদ্ বলিয়া গণ্য হইয়াছেন। ইঁহারা সরকারী কাজে ব্যস্ত থাকিয়াও স্ব স্ব খেয়ালের বশবর্ত্তী হইয়া অবসরমত ভারতবর্ষের নানাজাতীয় বিহঙ্গের বিবরণ লিখিয়া গিয়াছেন। যে মিষ্টার হিউম্কে (A. O. Hume) আমাদের ন্যাশন্যাল কংগ্রেসের জন্মদাতা বলিয়া সকলেই জানেন, তিনি যে পাখীর বিষয়ে পুস্তক রচনা করিয়া য়ুরোপীয় প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিলেন, তাহা বোধ হয় অল্প লোকই জ্ঞাত আছেন। তাঁহার রচিত Nests and Eggs of Indian birds নামক বৃহৎ পুস্তকের উল্লেখ মাত্র করিলেই যথেষ্ট হইবে। স্বনামখ্যাত ডগলাস দেওয়ারের (Douglas Dewar) নাম পক্ষিবিজ্ঞান বিভাগে সুপরিচিত।
যে সকল মনীষী প্রকৃতির রহস্য উদ্ঘাটনে আপনাদিগকে উৎসৃষ্ট করিয়াছেন, তাঁহাদের বিষয় পর্য্যালোচনা করিতে বসিতে স্বতঃই হিউবারের (Huber) কথা মনে পড়ে। ইনি প্রায় দেড়শত বৎসর পূর্ব্বে প্রাদুর্ভূত হইয়াছিলেন এবং মক্ষিকাতত্ত্ববিদ্ বলিয়া বিদ্বজ্জন সমাজে প্রথিতনামা। যৌবন কালে ইনি চক্ষুরত্ন হইতে বঞ্চিত হয়েন; কিন্তু তাঁহার সহধর্ম্মিণী স্বামীর চক্ষুস্বরূপ হইয়া মধুমক্ষিকা জীবনের সমস্ত বৃত্তান্ত আদ্যোপাত্ত পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে লক্ষ করিতেন। সেই মনস্বিনী নারীর পরীক্ষণের উপর নির্ভর করিয়া তদবলম্বনে হিউবার অনেক বৎসর ধরিয়া অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে ‘Natural History of the Bees’ নামক একখানি সুন্দর গ্রন্থ রচনা করেন।