বাক্যে আপনাকে নিয়োজিত করিয়াছেন; শ্রীযুত ভবানীচরণ নিপুণ চিত্রশিল্পী হইয়াছেন; শ্রীমান সত্যচরণ পক্ষিবিজ্ঞানে ভারতবাসীর পথপ্রদর্শক হইলেন।
এতদিন আমাদের দেশের পাখীর তথ্য জানিতে হইলে বিদেশী গ্রন্থ উদ্ঘাটন করা ভিন্ন উপায়ান্তর ছিল না। শতাধিক বর্ষ পাশ্চাত্য শিক্ষা এতদঞ্চলে প্রচলিত হইলেও প্রাণিবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান ও জীবতত্ত্ব বিষয়ে আমাদের রুচি আদৌ স্ফুরিত হয় নাই। এ স্থলে ইহাও স্মরণ রাখা উচিৎ যে, পুরাতন হিন্দু কলেজের প্রথিতনামা অধ্যাপক রামচন্দ্র মিত্র, ১৮৩৪ খৃষ্টাব্দে ‘পক্ষিবিবরণ’ নামক ৬৬০ পৃষ্ঠা পরিমিত একখানি গ্রন্থ সঙ্কলন করেন। কিন্তু বড়ই আক্ষেপের বিষয়, এই ৮৭ বৎসরের মধ্যে এদিকে কাহারও মন যায় নাই। আবহমান কাল হইতে হতভাগ্য বাঙ্গালীর ছেলে মেয়েরা কেবল মাত্র মুখস্থ বা কণ্ঠস্থ বিদ্যাকে পরমার্থ জ্ঞান করিয়া আসিয়াছে। ফলে এত দিন এ দেশীয়ের মস্তিষ্ক এক প্রকার অসাড় ও নিশ্চেষ্ট হইয়া পড়িয়াছিল। প্রাণিতত্ত্ব বিষয়ে যে দুই একখানি গ্রন্থ বাঙ্গলা ভাষায় ইতঃপূর্ব্বে রচিত হইয়াছে, তাহা প্রায়ই ইংরাজী পুস্তকের অনুবাদ মাত্র, এমন কি, সহিমুহুরী নকল বলিলেও অত্যুক্তি হয় না।
সত্যচরণের ‘পাখীর কথা’ সে দলের নহে, গ্রন্থকার স্বয়ং নানা শ্রেণীর পাখী প্রতিপালন করিয়া তাহাদের habits দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর, মাতোয়ারা হইয়া পর্য্যবেক্ষণ করিয়া যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিয়াছেন, তাহার বহু নিদর্শন এই পুস্তকের মধ্যে, এবং বোম্বাইএর ও বিলাতের নানা বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় দিয়াছেন। বুলবুল পাখীর Albinism ও Melanism লক্ষ্য করিয়া এই বিচিত্র রহস্যময় বর্ণ-বিপর্যয়ের সম্যক পরিচয় ইনিই সর্ব্ব প্রথমে