পক্ষিবিজ্ঞান জগতে প্রচার করিয়াছেন। এই সমস্ত খণ্ড প্রবন্ধের বিষয় আপাততঃ ছাড়িয়া দিলেও গ্রন্থকারের এই প্রথম প্রকাশিত বাঙ্গালা পুস্তকে পাখী সম্বন্ধে যথেষ্ট মৌলিক গবেষণার পরিচয় পাওয়া যায়। কোনও ইংরাজ পণ্ডিতও এ-দেশীয় পালিত অথবা বস্তু বিহঙ্গের পরিচয় এমন ভাবে দিবার চেষ্টা করেন নাই। পাখী পুষিতে হইলে কি কি করা চাই, পোষা পাখীর পর্য্যবেক্ষণ কিরূপ হওয়া উচিৎ, আবদ্ধ অবস্থায় প্রসূত বর্ণ সঙ্করের বন্ধ্যত্ব দোষ থাকে কি না, পাখীর সহজ সংস্কারের পশ্চাতে কোনরূপ বিচার বুদ্ধি আছে কি না, কৃত্রিম পক্ষীগৃহে নীড়স্থ ডিম্বগুলি হইতে একই সময়ে কি উপায়ে শাবক বাহির করিতে হয়,—এই সমস্ত অত্যন্ত কৌতূহলপ্রদ রহস্যময় ঘটনার বিবৃতি ও আলোচনা অন্যান্য বহু অবশ্য জ্ঞাতব্য বিষয়ের মধ্যে যথাযথ পুস্তকের প্রথম ভাগে সুবিন্যস্ত রহিয়াছে। তরুণ, গ্রন্থকারের লিপি চাতুর্য্যও বিশেষ প্রশংসার্হ। দ্বিতীয় ভাগে ব্যবহারিক পক্ষিতত্ত্ববিষয়ক এমন অনেক কথা সুনিপুণ ভাবে আলোচিত হইয়াছে, যাহা পাঠ করিলে পাঠক বর্গের কৌতূহল চরিতার্থ হইতে পারে এবং বোধ হয় কৃষিজীবী বাঙ্গালীর উপকারে আসিতে পারে। তৃতীয় ভাগে কালিদাস সাহিত্যে বিহঙ্গ-পরিচয় বিষয় আলোচিত হইয়াছে। ইহাতে শুক্, সারী, চক্রবাক্, কুররী প্রভৃতি বিহঙ্গ কুলের পরিচয় দেওয়া হইয়াছে। প্রত্যেক পাখীকে সনাক্ত (Identify) করিবার জন্য গ্রন্থকার যে, কেবল সংস্কৃত সাহিত্য ও অভিধান মন্থন করিয়াছেন, তাহা নহে; য়ুরোপীয় বিশেষজ্ঞগণের রচনা হইতে ভূরি ভূরি প্রমাণ উদ্ধৃত করিয়াছেন। কবিবর হেমচন্দ্র, সেক্সপীয়ারকে উদ্দেশ করিয়া বলিয়াছেন—“ভারতের কালিদাস, জগতের তুমি।” অবশ্য মানব প্রকৃতি বর্ণনায় ইংরাজ কবি অতুলনীয়; কিন্তু আমার বোধ হয় যে, Nature বা নিসর্গ চিত্র
পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৪৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩১২
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী