১৭
জাতিভেদ ও তাহার
প্রায়শ্চিত্ত[১]
আজ যে প্রসঙ্গের অবতারণা করিতেছি, সে সম্বন্ধে ক্রমান্বয়ে দশ বার দিন নানাদিক হইতে বলিলেও তাহার সম্যক্ আলোচনা শেষ হয় না। জাতিভেদ রূপ মহাপাপ ভারতবর্ষকে অধঃপতনের পথে কিরূপে চালিত করিয়াছে তাহার আলোচনা নানাদিক্ হইতে করা যাইতে পারে। আমি এস্থলে তাহার মাত্র দুই একটি দিক্ সম্বন্ধে কিছু বলিব। সম্প্রতি ভারতবর্ষে অন্যূন ৫০ হাজার মাইল (প্রায় পৃথিবীর পরিধির দ্বিগুণ) আমাকে পরিভ্রমণ করিতে হইয়াছে, নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-সংক্রান্ত অনেক কার্য্যে—দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনেক প্রকার অনুষ্ঠানে—যাইয়া অনেক শ্রেণীর লোকের সঙ্গে মিশিতে হইয়াছে। তাহার ফলে যেটুকু অভিজ্ঞতা হইয়াছে তাহাতে বুঝিয়াছি যে জাতিভেদ দেশের যে কি সর্ব্বনাশ করিয়াছে তাহা বলিয়া শেষ করা যায় না।
আর্য্যেরা যখন এদেশে আসিয়াছিলেন সেই বেদের যুগে জাতিভেদের অস্তিত্বও এদেশে ছিল না। জাতিভেদের কথা সংস্কৃতে নাই। ইহা Caste system-এর বাঙলা তর্জ্জমা। সংস্কৃত সাহিত্যে ‘বর্ণভেদ’, ‘বর্ণসঙ্কর’ প্রভৃতি কথা আছে বটে। আদিশূরের সময়ে বেদবিহিত ক্রিয়াকলাপ লোপ হওয়ায়, তিনি কান্যকুব্জ হইতে পাঁচজন ব্রাহ্মণকে
- ↑ ভবানীপুর ব্রাহ্ম সমাজে প্রদত্ত বক্তৃতার সারাংশ। শ্রীমান্ জ্ঞানেন্দ্রনাথ রায়, পি এইচ্ ডি ও প্রফুল্ল কুমার বসু, এম্ এস. সি কর্ত্তৃক অনুদিত।