ব্রাহ্মণদের উপর ভয়ঙ্কর বিদ্বিষ্ট। মাহারদের ব্রাহ্মণেরা পশুর চেয়েও অধম বলে ঘৃণার চক্ষে দেখে। “আমি যদি একটী ব্রাহ্মণকে খুন করে মরতে পারি তবে জীবন ধন্য হইবে” কলেজের কোন মাহার ছাত্রের মুখে এ প্রকার কথা শুনেছি। ভাবুন দেখি আমাদের ভিতরে কত গলদ, আমরা মুখে একজাতি একজাতি করি তাতে লাভ কি।
বাংলা দেশে হিন্দু মুসলমানের ধমনীতে একই রক্ত—মোগল আফগান তাতার বংশোদ্ভূত মুসলমান বাংলায় ক’জন? মৌলনা আক্রাম খাঁর এবং ঠাকুর পরিবারের এক পূর্ব্ব পুরুষ—উভয়ে এক বংশজাত—ঘ্রাণে অর্দ্ধভোজনের গল্পটা সকলেই জানেন বোধ হয়—রবিবাবু বলেন যে ঘ্রাণের চেয়ে একটু বেশী এগিয়ে ছিল বোধ হয়। ঠাকুর পরিবারের কথা বাদ দিন—ধন বিদ্যা ও অশেষগুণালঙ্কৃত এঁরা—সমাজে এঁদের মর্য্যাদা, প্রতিপত্তির কথা বিচার না করে— ইহাদের জ্ঞাতিগোত্র পাড়াগাঁয়ে কি ভাবে থাকেন, তা কাহারও অজানা নেই।
একটা কথা শুনি যে মুসলমানরা জোর করে হিন্দুদের মোছলমান করেছে। কথাটা সত্য বলে মনে হয় না। মুর্শিদাবাদ ও দিল্লীর নিকটবর্ত্তী স্থানে হিন্দুর সংখ্যা খুব বেশী—আবার দিল্লী বা মুর্শিদাবাদ হইতে দূরে চাটগাঁ অঞ্চলে মুসলমানের সংখ্যা খুব বেশী, আমার বিশ্বাস হিন্দু সমাজের অত্যাচারে কৃষিজীবী অনুন্নত পদদলিত লোকেরাই দলে দলে ইসলাম ধর্ম্ম গ্রহণ করেছে। সুবিধা দেখেই গ্রামকে গ্রাম মুসলমান হয়েছে। বাগেরহাটে খাঞ্জেয়ালির দরগা দেখেছি—শত সহস্র হিন্দু তথায় মানত করে, ভক্তিশ্রদ্ধা সহকারে সিন্নি দেয়। মওলালির দরগার কথা শুনেছি; হিন্দুরা তথায় মানত না কর্লে পীরসাহেবকে উপোষ করে থাক্তে হয়। শাহজালালের দরগার কথা সকলেই জানেন। মনীষী কার্লাইল বলেছেন যে “Islam is a perfect equaliser of