বসন স্পর্শ করিলেই আরোগ্যলাভ হইবে, ইহাই তখন বিচার শক্তির প্রাখর্য্য প্রমাণ করিতে থাকে। কেহ বা স্বপ্নাদিষ্ট হইয়া ঔষুধ খুঁজিলেন। কোন রমণীর উপর “আশ্রয়” হইয়াছে, ইত্যাদিবৎ দৈবঘটনার উপর তখন প্রগাঢ় বিশ্বাস জন্মিল। সমগ্র ইউরোপও মধ্যযুগে (Middle Ages) এই শোচনীয় অবস্থায় পতিত হইয়াছিল। লেকী বলেন, চারি সহস্র ধর্ম্ম-শাস্ত্রাভিজ্ঞ (theologians) পিটর লোম্বার্ড নামক এক মহাপুরুষের রচনাবলীর উপর টীকা করিয়াছেন। উক্ত ঐতিহাসিক অন্যত্র লিখিয়াছেন:—
There was scarcely a town that could not show some relic that had cured the sick...... The virtue of such relics radiated blessings all around them. (1, 141-42)
এই প্রকার অলৌকিক ও দৈবঘটনা লিপিবদ্ধ করিয়া ৫৫ খণ্ড বৃহদায়তন পুস্তক প্রচারিত হইয়াছে। পাঠকগণ ইহাতে বুঝিবেন যে ইউরোপেও কুল্লুকভট্ট ও রঘুনন্দনের ‘জাতিভাই” এর অভাব ছিল না। যে সময়ে লোকে এইপ্রকার কেবল মহাপুরুষগণের উক্তি ও তাঁহাদের টীকা টিপ্পনী লইয়া ব্যতিব্যস্ত থাকে, সে সময় প্রকৃত উন্নতি ও গৌরবের সময় নহে, বরং অধোগতির প্রারম্ভ।
কিন্তু ভারতের প্রকৃত গৌরবের সময়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করা যাক। ভারত যে শাস্ত্রবাদগ্রস্ত হইয়া চিরকাল কুসংস্কারাচ্ছন্ন ছিল, এমন নহে। প্রাচীন ভারতে অনুসন্ধিৎসা-বৃত্তি যথেষ্টই বলবতী ছিল এবং স্বাধীন চিন্তার স্রোত অপ্রতিহত ভাবে প্রবাহিত হইয়াছিল। এমন কি মহর্ষি কপিল ঈশ্বরের অস্তিত্ব পর্য্যন্ত স্বীকার করেন নাই, কেন না ইহা সহজে প্রমাণ হয় না। কপিল তথাপি বেদের দোহাই দিয়াছেন। যাহা হউক ষড়্দর্শন ও উপনিষদে বেদ অভ্রান্ত ও অপৌরুষেয় বলিয়া স্বীকৃত হইয়াছে, সুতরাং সমগ্র হিন্দুজাতির মুখ বন্ধ হইয়াছে। কিন্তু চার্ব্বাকমুনি শ্রুতিও