গত শুক্রবার ভবানীপুর ব্রাহ্ম সমাজে জাপানের কথা বলেছিলাম। ১৮৭০ খৃষ্টাব্দ হইতে নব্য জাপানের (New Japan) অভ্যুত্থান। কাউণ্ট অকুমার কীর্ত্তি কলাপ আমি নখ দর্পণে দেখিতেছি। ৫০ বৎসরে জাপান পৃথিবীর সভ্য জাতি সমূহের সমকক্ষ হয়েছে। আমরা সকল দোষ গভর্ণমেণ্টের ঘাড়ে চাপাই, মনে করিবেন না যে আমি গভর্ণমেণ্টের খোসামুদি করছি—আর আমি গভর্ণমেণ্টের কতটুকু খোসামুদি করে চলি তা সবাই জানে। আমাদের সমাজ দেহের ভেতরে ব্রণ—পূতিগন্ধময় ক্ষত, উপরে মলম প্রলেপ দিয়ে লাভ কি? অস্ত্রোপচার (Surgical operation) দরকার। ব্যাধি পোষণ করে কি লাভ? কত ক্ষতি হচ্ছে তাত চক্ষের উপর দেখিতেছি। যখন আমি খুলনা দুর্ভিক্ষ নিয়ে বিব্রত ছিলাম, তখন একদিন এক গ্রামে গিয়েছি। তখন জ্যৈষ্ঠ মাস, কতগুলি যুবক এসে বল্ল “দেখুন এসে আপনি ত দুর্ভিক্ষ নিবারণে ব্যস্ত—Relief operation নিয়ে বিব্রত আছেন, দেখুন এসে ষ্টীমারে কি ভিড়—কত বিধবা লাঙ্গল-বাঁধ তীর্থে যাচ্ছে।” বিধবারা সারাজীবনের গচ্ছিত ধন পরের হাতে তুলে দিতে যাচ্ছে দেখে মনে বড় ব্যথা হ’ল। কত বিধবা শাকান্নে তৃপ্ত হয়ে, নটে শাক, কলমি শাক খেয়ে টাকা মাটিতে পুঁতে ৪০৲, ৫০৲, ১০০৲ জমায়ে অর্দ্ধোদয়, লাঙ্গলবন্ধ, শ্রীক্ষেত্র, গঙ্গাস্নান প্রভৃতি তীর্থ যাত্রা উপলক্ষে সর্ব্ব পাপ ক্ষয় করে পরকালের গতির ব্যবস্থা করে। সংস্কারের ভালমন্দ সম্বন্ধে কিছুই বল্বোনা—তীর্থ যাত্রার ন্যায় অন্যায় সম্বন্ধে কিছু বল্তে চাই না—আর এই ব্রাহ্মসমাজের পুলপিট থেকে তীর্থযাত্রার বিরুদ্ধে বল্লেও বোধ হয় তেমন কোন অপরাধ হবে না। যাহোক, আমি Economic—অর্থ নৈতিক দিক হইতে এ বিষয় আলোচনা করছি। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বলছি এই জন্য যে চন্দ্রনাথ, গয়া, কাশী, প্রয়াগ,
পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঘর সামলাও
৩৪১