মথুরা, বৃন্দাবন প্রভৃতি তীর্থ যাত্রা দ্বারা খরচের চৌদ্দ আনা টাকা লণ্ডনে মনি অর্ডার করি; বাদবাকী দু’ আনা গরীব ষ্টেশন মাষ্টার, কেরাণী, কুলি ও তীর্থের পাণ্ডাদের দেই। কোথায় বদরিকাশ্রম আর কোথায় রামেশ্বর সেতুবন্ধ—কত কোটী, কত লক্ষ লক্ষ টাকা আমরা তীর্থযাত্রা উপলক্ষে ব্যয় করি; অথচ দেশের কাজের জন্য, জাতির কল্যাণের নিমিত্ত, জলাশয় দীঘী খনন, পথ ঘাট নির্ম্মাণ প্রভৃতি সৎকাজের জন্য টাকা পাওয়া যায়, না—পুণ্যশ্লোকা রাণী ভবানী ও অহল্যা বাইয়ের দৃষ্টান্ত লোকে অনুসরণ করে না। “তস্য প্রিয়কার্য্য সাধনঞ্চ তদুপাসনমেব”—অন্ধ আতুর কলেরা ম্যালেরিয়া কালাজ্বর গ্রস্থ দুস্থ গ্রামবাসীদের সেবার জন্য টাকা পাওয়া যায় না—অথচ কত টাকা তীর্থের জন্য ব্যয় হয়। পূর্ব্বে যখন রেল ষ্টীমার ছিল না—তখন অবশ্য এই তীর্থের টাকার অনেকাংশ দেশী মাঝি মাল্লার হাতে ঘুরত। তীর্থ যাত্রার ন্যায় অন্যায় আলোচনা আমি করব না—অর্থনৈতিক দিকের কথাই বল্লাম। কি সর্ব্বনাশকর মোহ—আমার উদ্ধার হোক— আর দুনিয়াশুদ্ধ সব উৎসন্নে যাক—কি ঘোরতর স্বার্থপর ভাব “প্রয়াগে মুড়িয়ে মাথা মরগে পাপী যথা তথা” কি অন্ধসংস্কার। এই ভাবে আমরা দিন দিন জাহান্নামে যেতেছি।
ইউরোপীয় এবং আমেরিকানদের আমরা জড়বাদী বলি— Materialistic— আমেরিকার বহুক্রোড়পতির নাম জানি— প্রবাসীতে কয়েক মাস পূর্ব্বে এদের আয়ের একটা তালিকা দেওয়া হয়েছিল—এরা এই কোটী কোটী টাকা কি ভাবে ব্যয় করে? আমরা অর্থ উপার্জ্জন করি পরকালের সদগতির নিমিত্ত, এরা করে ইহকালের জন্য—কোটী কোটী টাকা ব্যয় করে রিসার্চ্চ ইনিষ্টিটিউট, হাসপাতাল প্রভৃতি প্রতিষ্ঠা করে থাকেন। কার্ণেগী ১০০ কোটি টাকা ও রকফেলার