পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪৪
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

জাতি পরষ্পর সহানুভূতিতে এক হতে পারল। এতা ও হিনিন নামে দুইটী জাতি অস্পৃশ্য অতি ঘৃণিত বলে বিবেচিত হ’ত—আমাদের দেশের হাড়ি ডোম চামার প্রভৃতি হীন অনুন্নত ইতর শ্রেণীর সামিল—গ্রামের বাইরে তাদের বাস কর্‌তে হ’ত। ১৮৭১ খৃষ্টাব্দের ১২ই অক্টোবর জাপানের ইতিহাসে চিরস্মরণীয়, স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকিবে। কারণ ঐদিনে আভিজাত্য দর্পে গর্ব্বিত সামুরাইগণ নিজেদের দেশভক্তি ও উন্নত হৃদয়ের প্রভাবে স্বেচ্ছায় আপনাদের সর্ব্ববিধ বিশেষ সুবিধা ত্যাগ করলেন—এতা ও হিনিন সম্প্রদায়কে আলিঙ্গন করে বল্লে “আজ থেকে সমস্ত জাপান এক—আমরা সব ভাই ভাই।”

 “Indian Caste” নামক পুস্তুকে জনৈক সাহেব লিখেছেন যে ভারতে অন্ততঃ পাঁচ হাজার রকম শ্রেণীবিভাগ বিদ্যমান—একই বৈদ্য, তা বিক্রমপুর আর কালনায় ক্রিয়াকর্ম্ম চল্‌বে না। সায়ান্স কলেজে দেখি দোবে চোবে ব্রাহ্মণরা ৪।৫টা উনুন করে রাঁধছে, একদিন বল্লাম, যে “তোমরা সবাইত বামুন—একত্র রান্না বান্না করলেই ত পার, তাতে খরচও কম পড়ে—কয়লা কম লাগে, পরিশ্রম কম লাগে—পালা করে রাঁধলেই ত পার।” উত্তরে তারা বল্ল যে ওত ঠিক বাত হ্যায় বাবুজি লেকেন হাম কনোজী বামন, অমুক ত গয়া জিলামে আতা হ্যায় ইত্যাদি।

 অনেক কুচক্রী বক্তৃতাবাগীশ সমাজপতির নাম আমি জানি— “আমার কাছে লিষ্ট আছে—যাদের যত লম্বা টিকি তারাই তত নষ্টের মূল—একেবারে in the direct ratio, গৃহ বিবাদে সব ত উৎসন্নে যেতে বসেছে!

 আমাদের পদে পদে বিপদ! সে দিন বরিশালে ব্রজমোহন কলেজে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে কি কাণ্ডটাই না হয়ে গেল। শিক্ষিত সম্প্রদায়ের ভিতর কত গলদ। ঢাকায় কিন্তু এক অপূর্ব্ব দৃশা দেখেছি—রমণার