দুইধারে কেবল শ্যামবর্ণ দীর্ঘ তৃণদল, কোথাও বা বিপুলকায়া গাভী চরিয়া বেড়াইতেছে এবং ইচ্ছামত শুইয়া রোমন্থন করিতেছে। সঙ্গে সঙ্গে আলু, গোধূম, দ্রাক্ষা প্রভৃতিরও চাষ। একটুকরা জমিও পতিত নাই। ফ্রান্সের দক্ষিণে আপেল, কমলালেবু প্রভৃতিও যথেষ্ট পরিমাণে জন্মে। লিও নগরী ও তাহার চতুঃপার্শ্ববর্ত্তী স্থান রেশমের চাষের জন্য বিখ্যাত।
যখন ক্যালে পার হইয়া ডোভারে পৌঁছিলাম এবং ডোভার হইতে লণ্ডনে রওনা হইলাম, তখনও অবিকল ঐ প্রকার দৃশ্য দেখিলাম। অনেকের সংস্কার যে ইংলণ্ড কেবল সহরময় এবং স্তুপীকৃত পাথর ও ইটের সমাবেশ। সত্য বটে, লণ্ডন বিশেষতঃ ম্যান্চেষ্টার, বার্ম্মিংহাম, লিভারপুল, নিউক্যাসেল প্রভৃতি সহর দেখিলে এই কথাই মনে হয়। কিন্তু এইসব সহর সমস্ত ইংলণ্ডের কতটুকু স্থান অধিকার করে? লণ্ডন হইতে মিডল্যাণ্ড রেলওয়ে (Midland Railway) দিয়া এডিনবরা যাইতে হইলে কেবলই দেখা যায় বিস্তীর্ণ তৃণপূর্ণ মাঠ। তা ছাড়া, সঙ্গে সঙ্গে নানাবিধ উদ্ভিদ ও তরীতরকারীর ক্ষেত। এক কথায় বলিতে গেলে, ইংলণ্ড প্রভৃতি দেশে কৃষি শব্দে Cattle breeding বা পশুপালনও বুঝায়—এমন কি ইহাই তাহার প্রধান অঙ্গ। এই গ্রীষ্মকালে ঘাসের আবাদে প্রায় দুই কখন বা তিন কিস্তী ঘাস কাটিয়া শুকান হয়। এইজন্য ইংরাজীতে প্রবাদ আছে Make hay while the sun shines। এই শুষ্ক ঘাস রাশীকৃত করিয়া শীতকালে গরুর খোরাকের জন্য রাখা হয়। এতদ্ভিন্ন শালগম, গাঁজর, এবং এক প্রকার বৃহদাকার শালগম বিশেষ (mangel wurzel) এই সমস্ত চাষ করিয়া গরুর খাদ্যের জন্য সঞ্চয় করিয়া রাখা হয়। এতদ্ভিন্ন, গম, ওট, যব, বার্লি আদির বিচালী প্রভৃতিও যথেষ্ট ব্যবহৃত হয়। লণ্ডনের