পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



২০

বাঙ্গালী—মরণের পথে

(অর্থ-নৈতিক সমস্যা)

 ২০/২৫ বৎসর যাবৎ আমি নিরবচ্ছিন্ন চীৎকার করিয়া আসিতেছি যে, এই অন্নসমস্যার প্রশ্ন সমাধান করিতে না পারিলে, বাঙ্গালী জাতি ধরাপৃষ্ঠ হইতে বিলুপ্ত হইবে। গত ৫ বৎসর আমি উত্তর, পূর্ব্ব, পশ্চিম বাঙ্গালীর নগরে নগরে—এমন কি, গ্রামে গ্রামে পরিভ্রমণ করিয়াছি এবং আমার দৃষ্টি কেবল একদিকেই রহিয়াছে—বাঙ্গালীর শারীরিক শোচনীয় অবস্থা, পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব। দুগ্ধ—যাহা শিশুদের একমাত্র পরিপোষক এবং যাহাতে অস্থি ও মাংসপেশী গঠনের সমস্ত উপাদান আছে,—তাহা পাড়াগাঁয়েও অনেক সময় টাকায় ৴২॥০ সের এবং তাহাও দুষ্প্রাপ্য। দরিদ্র, চাষা-ভূষার ছেলে-পিলে অনেক সময় ভাতের মাড় এবং ভদ্রঘরের সন্তানগণ বার্লি প্রভৃতির ‘লেই’ দিয়া কোন রকমে উদর ভর্ত্তি করে। এইগুলির শ্বেতসার (Starch) প্রধান উপাদান। ইহাতে কালসিয়াম, নাইট্রোজেন প্রভৃতি উপকরণ, যাহা অস্থি ও মাংসপেশী গঠনের প্রধান সহায় হয়, তাহা আদৌ নাই। বাঙ্গালী ছেলেদের বুকের (Chest) পরিধি দিন দিন সঙ্কীর্ণ হইয়া আসিতেছে এবং চেহারাও জীর্ণ-শীর্ণ,—ইহা যে কেবল ম্যালেরিয়াব্যঞ্জক তাহা নয়, পুষ্টিকর ও প্রচুর খাদ্যের অভাবও সূচনা করে। একটী মাত্র প্রবন্ধে এ বিষয়ে আলোচনা করা অসম্ভব। আজ কেবলমাত্র এই কলিকাতা সহরের বাঙ্গালীদের অবস্থান বিষয়ে দুই চারিটী কথা বলিব।

 গবর্ণমেণ্টের ও ইংরাজ-বণিকদের রিপোর্টে দেখা যায় যে, এই