কতটুকু! গরুর চর্ব্বি, শুকরের চর্ব্বি, বড় বড় অজগরের চর্ব্বি, সময়ে সময়ে তাহা ভিন্ন মাটীবাদাম, মহুয়া প্রভৃতির তৈল থাকে। আর খাবারগুলি যে প্রকার অনাবৃত রাখে, মাছি ভন্ ভন্ করিতেছে ও ধূলায় ধূসরিত হইতেছে। সত্য বটে কাঁচের আধারের ভিতরে রাখিবার নিয়ম, কিন্তু সে কেবল আইন বাঁচান মাত্র। আজ কাল খাঁটি ঘি ৩৲ টাকা সেরের কম মিলে না তাহা দ্বারা প্রস্তুত মিঠাই রাজরাজড়া, আমীর, ওমরাহ ভিন্ন অন্যের সাধ্যায়ত্ত নহে। কিন্তু ফ্যাসানের ধন্য মহিমা! এই সমস্ত ভেজাল অভক্ষ্য মিষ্টীন্ন খাইব, তবুও নারিকেলের প্রস্তুত দ্রব্যাদি ছুঁইয়া হীনতার পরিচয় দিব না। চিড়া, মুড়ি ও খইতে ভেজাল চলে না, কিন্তু এ সব জিনিষ শিক্ষিত যুবকগণের অনুপাদেয়, অখাদ্য ও অস্পৃশ্য। সম্প্রতি College of Science এ আমার ছাত্রগণকে একটা ভদ্রলোকের দোকান হইতে ফরমাইস দিয়া প্রায় সাড়ে তিনশত টাটকা মুড়ির মোয়া আনিয়া খাইতে অর্পণ করি। আমার উদ্দেশ্য এই যে এই প্রকারে ইহার ব্যবহার প্রচলিত হউক এবং বর্তমান কুরীতিগুলিও দেশ হইতে অন্তর্হিত হউক। এ বিষয়ে এত লিখিবার আছে যে এক প্রবন্ধে তাহা সমাপন করা দুঃসাধ্য।
পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৯৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঙ্গালী—মরণের পথে
৩৬৫