মোকর্দ্দমা, বিবাদ বিসংবাদ কুড়াইতে ব্যস্ত। গ্রাম হইতে নৈতিক বা অর্থ-নৈতিক উন্নতি একেবারে তিরোহিত হইয়াছে। জমীদার ও শিক্ষিত লোকমাত্রই দেশত্যাগী বলিয়া প্রাচীন কালের বড় বড় সরোবর প্রায় মজিয়া আসিতেছে। জল-নিঃসরণের পথ ও জঙ্গল কাটার অভাবে ম্যালেরিয়া, কলেরা প্রভৃতি ভীষণ আকার ধারণ করে। এই খুলনারই কয়েকটি গ্রামে ঘুরিয়া খবর পাইলাম যে, বন্য শূকরের অত্যাচারে কৃষিকর্ম্ম করা দায়; বিশেষতঃ আলু-কচুর চাষ অসাধ্য হইয়া দাঁড়ায়। এই ত দেশের অবস্থা; অথচ দেশে টাকা ছড়ান রহিয়াছে, বিদেশীরা আসিয়া ইহা মুঠো মুঠো কুড়াইয়া লইয়া যাইতেছে। সামান্য দুই একটি দৃষ্টান্ত দিতেছি; তাহা সাতক্ষীরার লোক বুঝিবেন। খুলনার সদর ও সাতক্ষীরা মহকুমার দক্ষিণ ভাগে ‘নোনা গাঙ্গে’ অনেক স্থানে ঘুসো চিংড়ী ধরিবার খটী আছে।
এই সমস্ত নদীর জলকর আমাদের; যে জেলেরা এই মাছ ধরে, তাহারাও আমাদের প্রজা; যেখানে মাছ শুকায়, সে-ও আমাদের নিজের জমী। অথচ বাল্যকাল হইতে দেখিতেছি, বোম্বাই অঞ্চলের নাখোদা বণিক্গণ এই জেলেদিগকে বড় বড় ডেক্চী কিনিয়া দেয় ও টাকার দাদন দেয় এবং শুক্না মাছ প্রচুর পরিমাণে বিদেশে রপ্তানী করে। কিন্তু আমরা কি এতই অর্ব্বাচীন যে, এই ঘরের দুয়ারে যে ব্যবসাটা চলিতেছে এবং যাহা হইতে বিদেশীরা লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জ্জন করিতেছে, তাহা হইতে আমরা সামান্য জলকর ভিন্ন আর কিছুই পাই না? আর একটি দৃষ্টান্ত দিই, আপনারা সকলেই জানেন যে, কপোতাক্ষতীরবর্ত্তী এই সাতক্ষীরা মহকুমারই অন্তর্ভূক্ত বড় দলে’র বিরাট হাট আছে, এখানে বৎসরে লক্ষ লক্ষ টাকার মাল আমদানী-রপ্তানী হয়। কিন্তু ইহার প্রধান লভ্যাংশ মাড়োয়ারীগণ