পল্লীতে কোটি কোটি অজ্ঞ বর্ণজ্ঞানশূন্য নরনারী, তাহাদের সহিত তোমার কি সংযোগসম্বন্ধ রহিয়াছে? আমি নিজে রসায়নাগারে গবেষণা তুচ্ছ করিয়াও দেশহিতকর নানা কার্য্যে কাউন্সিলপদপ্রার্থী অনেকের কাছে ভিক্ষাপাত্র লইয়া দ্বারস্থ হইয়াছি; কিন্তু যিনি অম্লানবদনে কাউন্সিলে প্রবেশ করিবার জন্য ২০/৩০ হাজার টাকা ব্যয় করিয়াছেন, তিনিই আবার আমাকে রিক্তহস্তে ফিরাইয়া দিয়াছেন। এখন আবার বড় বড় নেতার ‘বোলচাল’ শুনি, কাউন্সিলে ঢোকা বিড়ম্বনা মাত্র। গভর্ণমেণ্টকে হারাইয়া দিলেও যদিচ্ছাচারী সার্টিফিকেসন করিবে। যদি সত্য সত্যই ইহার যাথার্থ্য প্রতিপন্ন হয়, তবে পল্লীসংস্কার কি সংগঠন মুখের কথা না হইয়া কার্য্যে পরিণত করা হয় না কেন?
তুমি সহরতলীতে থাক, আবার গ্রীষ্ম পড়িলেই শৈলবিহারে যাইয়া অর্থের শ্রাদ্ধ কর। অথচ তুমি নেতা বলিয়া সাধারণের কাছে মানসম্ভ্রম চাও। ইহা কি প্রহসন নহে? আজ হিন্দু-মুসলমান সমস্যা, ব্রাহ্মণ-অব্রাহ্মণ সমস্যা জটিল হইতে জটিলতর হইয়া দাঁড়াইতেছে। হিন্দু বল, মুসলমান বল, ব্রাহ্মণ বল, অব্রাহ্মণ বল, সকলেই ত এই বাঙ্গালার মাটী, বাঙ্গালার জল ও বাঙ্গালার হাওয়ায় পরিপুষ্ট। সকলেই ইহার সমান অধিকারী। তবে এ গৃহ-বিবাদে আজ দেশ জর্জ্জরিত কেন? আমার মনে হয়, বাঙ্গালার গ্রামই প্রকৃত মিলন-মন্দির। যদি অনুন্নত শ্রেণী বা তথাকথিত অস্পৃশু শ্রেণী বুঝিত যে, জমীদার ও শিক্ষিত সম্প্রদায় প্রকৃতপক্ষে তাহদের হিতাকাঙ্ক্ষী, তাহা হইলে কখনই এই আত্মকলহরূপ বহ্নি ইন্ধন পাইত না। জমীদার ও প্রজায়, শিক্ষিতে ও অশিক্ষিতের মধ্যে, এমন এক প্রাচীর ব্যবধান রহিয়াছে যে, কখনই জনসাধারণ ভাবিতে পারে না যে, উহারা তাহাদের বন্ধু। এই