নাই, কিন্তু আবার পুরাতন অভিজ্ঞতার উপর দাঁড়াইয়া-নবীন উদ্যোগের সহিত কয়েকটি কেন্দ্রে কায আরম্ভ হইয়াছে। সাধারণ লোক পরিশ্রম করিতে নারাজ; এমন কি, ধান একবার পাকিয়া উঠিলে ঘর হইতে নড়িতে চাহে না। পরদেশী আসিয়া ধান কাটিয়া মলিয়া গোলায় তুলিয়া দিবে এবং কৃষকগণ পায়ের উপর পা দিয়া বাজারের ভাল মাছ ও বিলাসদ্রব্য কিনিবে।
বিলাসিতার স্রোত কলিকাতা হইতে পল্লীগ্রামের অন্তস্তম প্রদেশকেও প্লাবিত করিতেছে। যেখানে সেখানে হুঁকার পরিবর্ত্তে সিগারেট; আবার যেখানে যেখানে জিলা বোর্ডের রাস্তা আছে, সেইখানেই মোটরবাস চলিতে আরম্ভ হইয়াছে। সে দিন বাগেরহাটে দেখিলাম, সহর হইতে ষাটগম্বুজ মাত্র ৪ মাইল দূরে অবস্থিত। চাষীরা বাঁকে করিয়া তরি-তরকারী বিক্রয় করিতে আনে। কিন্তু ঘরে ফিরিয়া যাইবার সময় ২ আনা ৩ আনা দিয়া মোটরে চড়িয়া বসে। আসামের শিলচরে গিয়াও এই প্রকার দৃশ্য দেখিয়াছি। পাহাড়ীরা পিঠে করিয়া দ্রব্যসম্ভার বেচিতে আসে। ঘরে ফিরিবার সময় মোটর চড়িয়া আরামে যায়, অথচ এই সমস্ত কৃষিজীবী জমীদার ও মহাজনের নিকট ঋণে ডুবিয়া আছে এবং শিশুসন্তানদিগকে একটু দুধও জোগাইতে পারে না। আর তাহারা প্রতিদিন সিগারেট ও মোটরে বেশ ২ পয়সা ব্যয় করে। আমি অনেকবার বলিয়াছি, হাইকোর্টের ব্যারিষ্টার ও বিলাতফেরত জাতিমাত্রই সর্ব্বাপেক্ষা স্বদেশদ্রোহী। কেন না, স্বদেশজাত দ্রব্য ব্যবহার তাঁহাদের নিকট অসভ্যতার পরিচায়ক। হুঁকা, আলবোলা ও ফুরসীতে ধূমপান করিলে তাঁহাদের জাতি যায়। আর তাঁহারাই ফ্যাসানের উৎস! আর জনসাধারণকেই বা কি দোষ দিব? বাবুরা যাহা করেন, তাহারা তাহারই অনুকরণ করে। ইহাতে দেশের