পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৪১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৮০ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী মনে করেন। কিন্তু এখন দেখিতেছি, প্রজাবর্গের আর এক ভীষণ বিপদ উপস্থিত । যাহারা তাহদের স্বগ্রাম, এমন কি স্বশ্রেণী ও পাড়াপড়শীর মধ্যে গণ্য, তাহাদের মধ্যে অনেকে এখন প্রকৃতপক্ষে তাঁহাদের প্রধান শত্রু হইয়া দাড়াইয়াছে। কোন কোন প্রজ, যাহারা একটু হিসাবী ও মিতব্যয়ী হইয়া একটু শ্রীমন্ত, তাহারা এখন তাহাদের প্রতিবেশীদিগকে এমন কড়া সুদে ও সর্তে টাকা দাদন করিতেছে যে, বন্ধকী জমীজমা সমস্ত বিক্রী করিয়া সহজেই পাওনাদারের করতলস্থ হয় এবং এই জমী এক প্রকার খাস হইয়া তাহার বর্গাদাতা হিসাবে যে সমস্ত প্রজার সর্ভ উচ্ছেদ হইয়াছে, তাহাদের দ্বারা চাষ করায়, ফনল হইলে তাহার স্থদে আসলে এবং চাষের খরচার বাবদ প্রায় সমস্ত ফসলই নিজ নিজ গোলায় তুলে । হতভাগ্য জোত্রহীন প্রজাগণ এ প্রকার দাসখত লিখিয়া এই বর্গাদাতাদিগের সম্পূর্ণ আয়ত্তাধীন। স্বতরাং দেখা যাইতেছে, সুদূরের জমীদার অপেক্ষ এই বর্গাদাতাগণই ভীষণ অত্যাচারী । ইহাদের কবল হইতে প্রজাসাধারণকে রক্ষণ করা নিতান্ত দরকার । এই ব্যাধির মূল নিরাকরণ করিতে হইলে লোকশিক্ষা জনসাধা রণের মধ্যে প্রচার হওয়া দরকার । ইহারা হিতাহিতজ্ঞানবিবর্জিত ; ফসল হইলেই কি করিয়া উৎপন্ন কৃষিজাত দ্রব্য বিক্রয় করিয়া টাকা উড়াইয়া দিবে, সে জন্য ব্যতিবস্ত হইয় পড়ে। বাজারে ও গুণ চতুগুণ দরে মাছ কিনিবে ; তাহার পর চোখের তৃপ্তিকর দেখনাই’ বিলাতী মাল-কিনিবার জন্য পাগল হইয় উঠে ; এমন কি, সাইকেল, কলের গান বাদ পড়ে না। আবার একবার অজন্ম হইলেই দিশেহারা হইয়া এই সমস্ত বিলাসদ্রব্য নামমাত্র মূল্যে বেচিয়া ফেলে । তাহার পর বৃটিশ রাজত্বের প্রারম্ভ হইতেই মামলা-মোকৰ্দমায় দেশ উচ্ছন্ন