তাহা বলা যায় না; আর ইহাদিগেরই বা দোষ দিব কি? আমি গোষ্ঠীপতি মৌলিক, আমার বংশমর্য্যাদা রক্ষার জন্য আমাকে কুলীনকে কন্যাদান করিতে হইবে এবং কুলীনের মেয়ে ভিন্ন আমার বিবাহ করিবার সাধ্য নাই। অথচ এ প্রকার ব্যবস্থা মনু, যাজ্ঞবল্ক্য, এমন কি, রঘুনন্দনেও খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। তবে কেন এ শৃঙ্খল আমি পায়ে পরি? নৈতিক দুর্ব্বলতাই আমাদের সর্ব্বনাশের মূল। দৈহিক পক্ষাঘাত অপেক্ষা মানসিক পক্ষাঘাত আরও অধিকতর ক্ষতিকর; কিন্তু বুঝিয়া সুঝিয়াও আমাদের সমাজের নানাবিধ অনিষ্টকর প্রথা নিরাকরণ করিতে অগ্রসর হইতে পারি না। তাই বলিতেছি, এই মানসিক দুর্ব্বলতা পরিহার করিতেই হইবে,—যদি আমরা টিকিয়া থাকিতে চাই।
পরিশেষে একটু আশার বাণী বলিয়া উপসংহার করব। এই সাতক্ষীরার সন্নিকটে অর্থাৎ আশাশুনি, বুধহাটা, মিত্র তেঁতুলিয়া প্রভৃতি কেন্দ্রে খুলনার দুর্ভিক্ষের পর হইতেই বাজিতপুরের আশ্রমের সেবকবৃন্দ কয়টি সেবাশ্রম খুলিয়াছেন। তাঁহারা অনুন্নত শ্রেণীর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষাবিস্তারের চেষ্টা করিতেছেন এবং ম্যালেরিয়া, কলেরা, এমন কি গোমড়ক উপস্থিত হইলে যথাসাধ্য ঔষধ বিতরণ করিতেছেন এবং নিজেরা যাইয়া জীবনসংশয় করিয়া আর্ত্তের সেবা করিতে ক্রটি করেন না।
খুলনার পরপারেও তাঁহারা আর একটি সুন্দর- সেবাশ্রম স্থাপন করিয়াছেন এবং নরনারায়ণের কল্যাণে আত্মোৎসর্গ করিয়াছেন।
খালিলপুরের ত্যাগী অক্লান্তকর্ম্মী একনিষ্ঠ সাধক শ্রীযুত যামিনীভূষণ মিত্র খালিসপুরে আশ্রম খুলিয়া পার্শ্ববর্ত্তী অনেকগুলি গ্রামে চরকা চালাইতেছেন, এবং চরকার সূতার কাপড় সেই অঞ্চলে বুনাইয়া খদ্দর