পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

পুলকিত না হয়? আজ নূতন দিন আসিয়াছে, পৃথিবীর পূরাতন মুখ মুছিয়া গিয়াছে, নূতন আলো মাখিয়া, নূতন আকাশে আজ নূতন প্রভাকরের আগমন যেন ঊষার পাখী গাহিয়া গিয়াছে! এই সাম্য মৈত্রী স্বাধীনতার দিন এই বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভ—এই যুগান্তকারী ঘটনানিচয় স্পষ্টই যেন এক নূতন মার্গ পৃথিবীর ঘুমন্ত জাতির নিকট উদ্ঘাটিত করিতেছে।

 বাঙ্গালীর শক্তি ও সামর্থ্যের কিরূপ শোচনীয় অপচয় হয় তাহার একটী দৃষ্টান্ত দিতেছি। যাঁহাদের আদালত সম্বন্ধে কিছু জ্ঞান আছে তাঁহারাই জানেন উকিলগণের কিরূপ দুর্দ্দশা। মকদ্দমার অপেক্ষা উকিলের সংখ্যা অধিক হইয়া পড়িয়াছে—কাজেই অনেক নব্য উকিলের উপার্জ্জন কত তাহা সহজেই অনুমেয়। অথচ, আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে এখনও আড়াই হাজার গ্রাজুয়েট আইন পড়িতেছে। ইহারা আইন পাশ করিয়া কি উপার্জ্জন করিবে তাহা কি কেহ ভাবিয়া দেখিতেছেন? যে জিনিষের আদৌ কাট্‌তি নাই—যাহা গুদামে পচিতেছে—তাহাই আবার এত অধিক পরিমাণে তৈয়ার করা কি পাগলামি নয়?

 অথচ অপর দিকে দেখ ভারতবর্ষের অন্যান্য জাতি ব্যবসা বাণিজ্য দ্বারা কত ঐশ্বর্য্য লাভ করিতেছে! শ্রীযুক্ত কেসোরাম পোদ্দার ৬৬॥০ লক্ষ টাকার সমরঋণ ক্রয় করিয়াছেন। সেদিন রায় বাহাদুর শিওপ্রসাদ ঝুন্‌ঝুন্‌ওয়ালা এক লক্ষ টাকার কাপড় বিতরণ করিলেন। বোম্বাইয়ের ধনকুবের সওদাগরগণও নানা সৎকার্য্যে অজস্র দান করেন। বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য ৩০ লক্ষ টাকা দান করিয়াছেন। আর কত দৃষ্টান্ত দিব? এই কলিকাতা সহরেই দেখা যাইতেছে ইউরোপীয়ান, মাড়ওয়াড়ী, পার্শি, ভাটিয়া, দিল্লিওয়ালা প্রভৃতি দূর দেশ হইতে আসিয়া প্রচুর অর্থ উপার্জ্জন করিতেছে আর বাঙ্গালী নিশ্চেষ্টভাবে তাহা দাঁড়াইয়া